নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে আগামী নভেম্বর মাসে গণভোট আয়োজনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। পাশাপাশি, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি রাখার আহ্বানও জানিয়েছে দলটি। গতকাল সোমবার নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন ও অন্য কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, বর্তমান নির্বাচনি পদ্ধতিতে গত ৫৪ বছরে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এতে ‘দিনের ভোট রাতে’ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই আমরা কমিশনকে বলেছি, বিদ্যমান পদ্ধতির পাশাপাশি পিআর পদ্ধতিরও প্রস্তুতি নিতে। গণভোট বিষয়ে তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচন ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট একসঙ্গে না করে আলাদা করে আয়োজন করতে হবে। একসঙ্গে হলে প্রার্থীরা নিজেদের নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত থাকবে, ফলে গণভোটের গুরুত্ব কমে হারাবে।
তিনি বলেন, একই দিনে গণভোট হলে রিফর্মস ইস্যু মাইনর হয়ে যাবে। সবাই নিজের দলের প্রার্থীকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। বরং আলাদা দিন হলে মানুষ মনোযোগ দিয়ে ভোট দিতে পারবে। অতীতে ১৭ বা ২১ দিনের ব্যবধানেও গণভোট হয়েছে। এতে খুব বেশি বাড়তি ব্যয়ও হয় না, শুধু ব্যালট ও কিছু আনুষঙ্গিক খরচ বাড়ে।
বৈঠকে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) পদ্ধতি নিয়েও আলোচনা হয়। জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ পদ্ধতি বিভিন্ন দেশে কার্যকরভাবে চালু রয়েছে। ইসি জানায়, সরকার সিদ্ধান্ত নিলে যা যা করা প্রয়োজন তা বাস্তবায়নে তারা সক্ষম এবং সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ছাড়া প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিয়েও আলোচনা হয়। ইসি জানায়, জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) পাশাপাশি জন্মসনদ দিয়েও প্রবাসীরা ভোট দিতে পারবেন।
অন্যান্য দাবির মধ্যে জামায়াত জালভোট রোধে এনআইডির ভিত্তিতে ভোট নেওয়ার কথা বলেছে এবং ইসি ছবিসহ ভোটার তালিকার কথা জানিয়েছে। পাশাপাশি, নির্বাচনে কর্মকর্তা নিয়োগে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা এবং রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগ লটারির মাধ্যমে করার জন্য জামায়াত আহ্বান জানিয়েছে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, কমিশন এখন পর্যন্ত গণভোট নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।