ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বছরে ৭ বিলিয়ন ডলার গচ্চা বাংলাদেশের

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ১১:৫৩ পিএম

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর দায় মাত্র ৩.৩ শতাংশ। কিন্তু এর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শতকরা ৭০ শতাংশই পড়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ওপর। জলবায়ু ফান্ডের যে অর্থ পাওয়া যায় তার ৯৫ ভাগই ঋণ, মাত্র ৫ ভাগ অনুদান। অর্থাৎ স্বল্পোন্নত দেশগুলো ঋণে জর্জরিত হয়ে উন্নত দেশগুলোর সৃষ্ট বৈশ্বিক উষ্ণতার দায় পরিশোধ করছে। বাংলাদেশের মানুষকে বছরে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য ৭ বিলিয়ন ডলার গচ্চা দিতে হচ্ছে।

গতকাল সোমবার এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন খান। জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম ও চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন খান বলেন, বায়ুদূষণের জন্য গড় আয়ু ৭ বছর কমে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় বাংলাদেশকে জলবায়ুবিষয়ক বিতর্কে প্রাকৃতিক সুরক্ষার কথা নিয়ে আসতে হবে। বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন এবং ন্যূনতম পানির প্রয়োজনের কথা বলতে হবে। এগুলো কিছুতেই দর-কষাকষির বিষয় নয়। আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে ঋণ মওকুফ পেতে হবে।

এ বিষয়ে এখন থেকে কাজ শুরু করা দরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য বহুমাত্রিক ব্যাংকের আর্থ-সলিডারিটি ফান্ড তৈরি করতে হবে। দূষণের জন্য কার্বন ট্যাক্স ধার্য করতে হবে। জলবায়ুর জন্য আরও ফান্ডের উৎস খুঁজে বের করতে হবে।

সভায় জানানো হয়, চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ বিশ্বের ৫৫টি স্বল্পোন্নত দেশের জলবায়ু ঋণ দায়সূচক তৈরি করেছে। জলবায়ুবিষয়ক বৈশ্বিক বৈঠকে এ সূচকের ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশ ঋণ দায়গ্রস্ততার বিশদ বিবরণ দিতে পারবে। বাংলাদেশি এ প্রতিষ্ঠানের তৈরি সূচক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে জলবায়ুর দায়বদ্ধতার দরকষাকষিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত বক্তারা বলেন, জলবায়ু অর্থায়নে বাংলাদেশ ১ ডলার অনুদানের বিপরীতে ২.৭ ডলার ঋণ নিচ্ছে। তারা বলেন, বাংলাদেশে মাথাপিছু জলবায়ু ঋণ প্রায় ৮০ ডলার, যা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর গড়ের তিনগুণেরও বেশি। বহুপাক্ষিক অর্থায়নেও এ ঋণ এলডিসি গড়ের প্রায় পাঁচগুণ। এ ঋণনির্ভর সহায়তা কার্যত দেশের জলবায়ু নীতি ও রাজস্ব নীতিকে বিপন্ন করছে।

সভায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি, পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ বলেন, জলবায়ু খাতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বছরে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩০০ বিলিয়ন ডলার, যা আবার বিতরণের জন্য পাওয়া যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জলবায়ু ঋণ দায়সূচকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন তন্ময় সাহা।