বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার তৈরি, বাজারজাতকরণ ও প্রশিক্ষণ খাতের প্রায় ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও ৩০ কোটি ৭৮ লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টায় ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন।
২০২৩ সালের ৩১ মে খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে মামলাটি দায়ের করা হয়। ওই মামলায় বিভিন্ন খাতের ৩৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে তদন্তকালীন দুদকের হস্তক্ষেপে আত্মসাৎ ঠেকানো গিয়েছিল বলে জানা গেছে। চার্জশিটে আসামিরা হলেনÑ ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিক উদ্দিন, বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানির (বিএসইসি) সাবেক পরিচালক (অর্থ) আব্দুল মোতালেব এবং সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মি. ইয়ে ওয়েনজুন।
তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা উন্নত করার জন্য দেশীয় ব্যবস্থাপনায় প্রিপেইড মিটার উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সরকারি মালিকানাধীন ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) ও চীনের হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি হিসেবে খুলনায় ‘বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড’ (বিএসইসিও) প্রতিষ্ঠা করা হয়। যার উদ্দেশ্য ছিল বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার সংযোজন, উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ করা। প্রি-পেইড মিটার উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ায় প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন খাতে বরাদ্দকৃত টাকা লুটপাট হয়।
মামলার এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে এলসি করে হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানির কোনো প্রশিক্ষণ প্রদান না করে ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৮ টাকা, রিপেয়ার ট্রেনিং বাবদ ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৬৭০ টাকা, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল সাপোর্ট সার্ভিস খাতের ৫ কোটি ৫২ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা, তিন বছরের ওয়ারেন্টি মিটারের জন্য বরাদ্দকৃত ৭ কোটি ২১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৮ টাকা এবং প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল সাপোর্ট সার্ভিসের ১ কোটি ২৯ লাখ ৯৭ হাজার ৩৫০ টাকাসহ বিভিন্ন খাতের ৩৬ কোটি ৩৭ লাখ ৫৬ হাজার ৮৭৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে তদন্তে ২ কোটি ৪৩ লাখ ৮০ হাজার ৬১৭ টাকা আত্মসাৎ ও ৩০ কোটি ৭৮ লাখ ১৯ হাজার ৬১২ টাকা আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে অনুমোদিত চার্জশিটে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন