শনিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৫, ০৪:৪৭ এএম

ফের অশান্ত জেনেভা ক্যাম্প

মাদকের স্পট দখলে নিতে হামলা-লুটপাট

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৫, ০৪:৪৭ এএম

মাদকের স্পট দখলে  নিতে হামলা-লুটপাট

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে মাদক কারবারিদের অপরাধের মাত্রা প্রতিনিয়ত ছাড়িয়ে যাচ্ছে। মাদক বিক্রির স্পট ও এলাকা দখলে নিতে রাতের অন্ধকারে অস্ত্রধারীদের হামলা ও লুটপাটের ঘটনা এখন প্রতিদিনের চিত্র। গত ১০ মাসে অন্তত মাদক ও হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন দেড় হাজারের বেশি। এরপরও অশান্ত জেনেভা ক্যাম্প। গতকাল শুক্রবার ক্যাম্পের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে অনেকটাই দুর্বল জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি বুনিয়া সোহেলের গ্রুপ। আর এই সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ক্যাম্পের ৪ নম্বর সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করা চুয়া সেলিম ও তার গ্রুপের সদস্যরা।

সম্প্রতি চুয়া সেলিমের সঙ্গে জোট বেঁধেছে ক্যাম্পের অন্যতম মাদক কারবারি পার মুন, পিচ্চি রাজা, শাহ আলম ও ইমতিয়াজ। তারাই এখন ৭ নম্বর দখল করতে চায়। সর্বশেষ গত কয়েক দিন ধরে ভোররাতের দিকে ক্যাম্পের ৭ নম্বর সেক্টরে ধারাবাহিক হামলার ঘটনা ঘটছে। এমন হামলায় আতঙ্ক নিয়ে রাত পার করছেন ক্যাম্পের সাধারণ বাসিন্দারা। গত কয়েক দিনে রাতের অন্ধকারে ৭ নম্বর সেক্টরের অন্তত ৩০টি বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে মাদক কারবারিরা কসাই সুমিদ (২৪) নামের এক তরুণকে কুপিয়ে আহত করেছে। তিনি জেনেভা ক্যাম্প ৭ নম্বর সেক্টর জি ব্লকের বাসিন্দা সালামের ছেলে। বুনিয়া সোহেলের সহযোগী সন্দেহে তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।

হামলা থেকে এমনকি বাদ যায়নি শীর্ষ মাদক কারবারি বুনিয়া সোহেল ও তার আত্মীয় স্বজনদের বাড়িও। র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা বুনিয়া সোহেলের বড় ভাই টুনটুনের বাড়িতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়েছে। সেই লুটপাটের একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঘুরে কোথাও কোনো কিছু অক্ষত নেই। হাঁড়িপাতিল ও আসবাবপত্র ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে। লুট করা হয়েছে মূল্যবান সব সামগ্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতের অন্ধকারে এই হামলার নেপথ্যে শীর্ষ মাদক কারবারি ও জেনেভা ক্যাম্পের অন্যতম হেরোইন সাপ্লাইকারী আরিফ ওরফে চাপা আরিফ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে বুনিয়া সোহেলের মাদকের কারবারে ভাটা পড়েছে। ফলে আরিফের মাদকের কারবারের গতি হারায়। এরপর ৪ নম্বর সেক্টরের চুয়া সেমিল গ্রুপের পার মুন, পিচ্চি রাজা, শাহ আলম ও ইমতিয়াজ গ্রুপকে হাতে নেয় চাপা আরিফ। তার মাদকের কারবার চালাতে এবার পুরো ক্যাম্প দখলে সহযোগীর নামে রাতের অন্ধকারে অস্ত্রধারীদের দিয়ে বাড়ি-ঘরে হামলা ও লুটপাট চালানো হচ্ছে। এই গ্রুপ এবার ৭ নম্বর সেক্টরসহ পুরো ক্যাম্প দখলে নিয়ে মাদকের সামরাজ্য বিস্তার করা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

হামলার নেতৃত্বে যারা : ভুক্তভোগীরা বলছেন, ক্যাম্পের দক্ষিণ পাশের ৪ নম্বর সেক্টরের শীর্ষ মাদক কারবারি পার মনু, পিচ্চি রাজা, চুয়া সেলিম, শাহ আলম, ইমতিয়াজ এই হামলার নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের নেতৃত্বে লালন, রনি, তারেক, মাওরা রাসেল, টুকি, সামির, বিকি, ফেরদৌস, চুয়া সেলিম, নেতা সামির, চেম্বার রাজ, সুমন, পিচ্চি রাজা, আদিল, ফাইজান, নওশাদ, বেলুন অস্ত্র হাতে হামলা ও লুটপাট চালানো হচ্ছে।

এদিকে মাদক কারবারিদের লাগাম টানতে জেনেভা ক্যাম্পে চেক পোস্ট ও গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগের কথা জানিয়েছিল পুলিশ। তারা জানিয়েছিলেন, জেনেভা ক্যাম্পের চারপাশে থাকা হুমায়ুন রোড, বাবর রোড, গজনবী রোডের সাতটি পয়েন্টে স্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। এই চেকপোস্ট দিয়ে হেঁটে বৈধ বাসিন্দারা ক্যাম্পে প্রবেশ করবেন। যাতায়াতের সময় প্রত্যেককেই মুখোমুখি হতে হবে তল্লাশির। কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়েছে পুলিশের সেই উদ্যোগ। দুপুর ২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলা চেক পোস্ট মাদক কারবারিদের ব্যবসায় কোনো প্রভাবই ফেলতে পারেনি।

ক্যাম্পের সাধারণ বাসিন্দারা জানান, চেক পোস্ট বসালে কিছুটা সতর্ক থাকে মাদক কারবারিরা। কিন্তু রাত ১১টায় চেক পোস্ট উঠে গেছে প্রকাশ্যে হাক ডাক দিয়ে মাদক বিক্রি করা হচ্ছে।

এদিকে রাতের অন্ধকারে ধারাবাহিক হামলা চললেও এর কিছুই জানে না থানা পুলিশ। ক্যাম্পে বিভিন্ন বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক আহমেদ বলেন, জেনেভা ক্যাম্পে হামলা ও লুটপাটের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। কেউ কোনো অভিযোগ করে না। এমনকি যে হামলার কথা বলছেন, কেউ আমাদের জানায়নি। ক্যাম্পের কোনো অভিযোগ পেলে আমরা মামলা নেই। আসামিদের গ্রেপ্তার করি। এখন কেউ তো আমাদের কিছুই জানাচ্ছে না।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!