ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ দ্রুত শেষ না হলে বৃহৎ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সিলেট বিভাগ যোগাযোগ ও উন্নয়ন পরিষদের শীর্ষ নেতাসহ সিলেটের সচেতন নাগরিক সমাজ। তারা বলছেন, সারা দেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে, সিলেট তখন বৈষম্য ও বঞ্চনায় হাবুডুবু খাচ্ছে। বিগত দুই দশকে সিলেটে নেই কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন প্রকল্প। ২০২১ সালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ শুরুর পর সিলেটবাসী সড়কপথে যাতায়াতে ভোগান্তি কমার স্বপ্ন দেখেছিল।
কিন্তু ঘটেছে ঠিক উল্টো। দীর্ঘদিন ধরে সড়কের কাজ বন্ধ থাকায় যানজটে তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ছয়-সাত ঘণ্টার সড়কপথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ১২-১৮ ঘণ্টা। শুধু তাই নয়, ব্রিটিশ আমলের লক্কড়-ঝক্কড় রেলপথ আর রেলের বগি নিয়ে চলছে ট্রেন। প্রতিদিনই কোনো না কোনো ট্রেনের ইঞ্জিল বিকল হয়ে রেলপথেও ভোগান্তির শেষ থাকে না। তাই অনতিবিলম্বে সড়কপথের কাজ শেষ না হলে এবং রেলকে যুগোপযোগী না করলে বৃহৎ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
গতকাল শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সিলেট বিভাগ যোগাযোগ ও উন্নয়ন পরিষদের আয়োজনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ছয় লেনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন এবং সৃষ্ট যানজট নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তরা এসব কথা বলেন।
বক্তারা আরও বলেন, সিলেট বিভাগের পর্যটন খাত, চা-শিল্প, খনিজ সম্পদ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও দেশের অর্থনীতিতে যথেষ্ট অবদান রেখে যাচ্ছে। সিলেট বিভাগের প্রায় কয়েক লাখ মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত আছেন। দেশের মোট ৬৫ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে আসছেন সিলেট বিভাগের প্রবাসী জনগণ। অথচ প্রবাসীরা যখন দেশে এসে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলায় যাওয়া-আসা করেন, তখন ভোগান্তির সম্মুখীন হন। ঢাকা থেকে সড়কপথে সিলেটে যেতে প্রায় ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা লেগে যায়। বিশেষ করে রূপসী থেকে কাঁচপুর ব্রিজ, বারৈচাবাজার আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড মোড় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত নিত্যদিন যানজট লেগেই থাকে। এতে এলাকাবাসী ও পর্যটকদের চলাফেরায় মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। তাই ছয় লেনের রাস্তার কাজ দ্রুত সম্পন্ন এবং যানজট নিরসন সিলেটবাসীর অপরিহার্য দাবি হয়ে উঠেছে।
মানবন্ধনে হবিগঞ্জ সমিতি, ঢাকার সভাপতি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরফদারের সভাপতিত্বে সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন শিপলুর পরিচালনায় বক্তব্য দেন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল মজিদ চৌধুরী ও আকবর হোসেন মঞ্জু, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মালেক খান, বিশিষ্ট সমাজসেবক এ এফ এম সাইফুদ্দিন শফিক, পল্টন জামায়াতের আমির শাহীন আহমদ খান, সিলেট বিভাগ যোগাযোগ ও উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন সোহেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইন্তেসার আহমদ চৌধুরী, সাইদুল হক চৌধুরী, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক আহমেদ রিয়াজ, সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতি ঢাকার সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম আহমেদ, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক মাহবুবুল আলম মানু, সিলেট বিভাগ যোগাযোগ ও উন্নয়ন পরিষদের অর্থ সম্পাদক এশতাকুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক নবাব সালেহ আহমদ, নির্বাহী সদস্য রেসাদ আহমদ চৌধুরী, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য সায়েম আহমদ ও ইমরান আহমদ, সুজন মিয়া, জালালাবাদ ছাত্রকল্যাণ সমিতি সরকারি তিতুমীর কলেজের সাবেক সহসভাপতি তোফায়েল আহমদ, জালালাবাদ ছাত্রকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ খান ফাহিম প্রমুখ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন