গত ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ায় কয়েকজন খ্যাতিমান শিল্পী ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বকে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে তাদের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করেছেন বিক্ষুব্ধ একদল ছাত্র-জনতা। গতকাল বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আখ্যা দেওয়া ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টদের’ ছবিতে জুতা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
কর্মসূচিতে বিক্ষুব্ধ জনতা চলচ্চিত্র-নাটকের তারকা, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের নাম ধরে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের স্লোগানে শোনা যায়Ñ ‘জয়া আহসানের গালে গালে, জুতা মারো তালে তালে, চঞ্চলের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে, শাকিব খানের গালে গালে, জুতা মারো তালে তালে।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সামিউল হক বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকার গত ১৬ বছর শুধু রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ফ্যাসিজম নয়, সাংস্কৃতিক ফ্যাসিজমও কায়েম করেছিল। মুজিববাদী ও বাকশালী চেতনার ভিত্তিতে তারা সংস্কৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে আমরা একটি ফ্যাসিজমমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। অথচ কিছু সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ আবারও সেই বাকশালী কালচারাল ফ্যাসিজম ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। আজকের এই কর্মসূচি তাদের বিরুদ্ধেই।’
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। এখনো কিছু কালচারাল ফ্যাসিস্ট সেই মুজিববাদ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশে আর কোনো মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা আমরা বরদাশত করব না। কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বয়কট করা হবে।’
বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচির একটি ব্যানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বয়কট করুন’, ‘শহীদের রক্তকে তাচ্ছিল্য করে গণহত্যার পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করে এদের চিনে রাখুন’ লেখা রয়েছে।
জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচির পোস্টারে ও স্লোগানে যাদের নাম উল্লেখ করা হয় তাদের মধ্যে রয়েছেন- কণ্ঠশিল্পী লিঙ্কন (আর্টসেল), রাহুল আনন্দ, সিয়াম (এসপি ক্রিয়েশন), অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, অভিনেতা কচি খন্দকার, চঞ্চল চৌধুরী, সাজু খাদেম, শাকিব খান, আরশ খান, খায়রুল বাসার, ইরফান সাজ্জাদ, স্বাধীন খসরু, যাহের আলভী, নির্মাতা ও অভিনেতা সুমন আনোয়ার, অভিনেত্রী জয়া আহসান, শমী কায়সার, নাজিফা তুষি, মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া, সুনেরাহ বিনতে কামাল, পিয়া জান্নাতুল, পারসা মেহজাবিন পূর্ণি, মেহের আফরোজ শাওন, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, লেখক সাদাত হোসাইন, ফারাবি হাফিজ এবং আব্দুল নূর তুষার প্রমুখ।
কর্মসূচি থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সাংস্কৃতিক ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘোষণা দেয়। এ ছাড়া ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টদের’ বয়কটের ডাক দেওয়া হয়।
বলা দরকার, অভিনেতা আরশ খান, অভিনেত্রী সংগীতশিল্পী পারসা মেহজাবিন পূর্ণি ও লেখক সাদাত হোসাইন জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল বলে জানা গেছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন