রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত গ্রাফিতির সামনে শিবিরের ব্যানার টাঙানোর চেষ্টা থেকে সাধারণ শিক্ষার্থী, শিবির ও ছাত্রদলের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়ে শনিবার গভীর রাতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল রোববার ক্যাম্পাস ও আশপাশে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, শনিবারে রাতে শিবিরের একদল কর্মী গ্রাফিতির ওপর ব্যানার লাগাতে গেলে তারা বাধা দেন। এ সময় সাংবাদিক সমিতির সাবেক এক নেতা, যিনি শিবিরের কর্মী হিসেবেও পরিচিত, নিজ হাতে ব্যানার লাগাতে এগোলে আবারও বাধা দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শিবিরকর্মীরা কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থীকে ধাওয়া করলে তারা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কাছে সাহায্য চান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে এলে শিবিরকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায় এবং পরে পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাস্থলে থাকা শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজে পর্যাপ্ত জায়গা থাকলেও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রাফিতির সামনে ব্যানার টাঙানোর বিষয়টি নিয়েই বাগবিত-া শুরু হয়। একপর্যায়ে একজন শিক্ষার্থী ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সমস্যা কোথায়?’Ñ এ কথা বলতেই তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এবং এর পরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সংঘর্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ ছাত্রদলেরও কয়েকজন আহত হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।
তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন বলেন, ‘রাত ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে ব্যানার লাগাতে আসার উদ্দেশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে সাহায্য চাইলে আমরা পাশে দাঁড়াই। এতে ছাত্রদলের ওপর দোষ চাপানোর কোনো সুযোগ নেই।’ ছাত্রদলের নেতাদের দাবি, সাংবাদিক সমিতির মধ্যে শিবির ও ছাত্রলীগের কর্মীরা থাকায় তারা ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিয়ে ছাত্রদলকে জড়ানোর চেষ্টা করছে।
অন্যদিকে তিতুমীর কলেজ শিবির সভাপতি খাদেমুল ইসলাম সিয়াম বলেন, নবীনবরণ উপলক্ষে কয়েকটি ব্যানার টাঙানো হয়েছিল, যা ছাত্রদল খুলে ফেলায় রাতে নতুন করে লাগাতে গেলে বাধা দেওয়া হয়। এতে তাদের ৬-৭ জন নেতাকর্মী ও সাংবাদিক সদস্য আহত হয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাধা দেওয়ার পরও কেন ব্যানার ফের লাগাতে যাওয়া হয়েছিলÑ এ প্রশ্নের উত্তর শিবিরের নেতারা স্পষ্টভাবে দিতে পারেননি।
ঘটনার বিষয়ে বনানী থানার ওসি রাসেল সরোয়ার জানান, পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে আহতদের বেশির ভাগই শিবির ও ছাত্রদলের কর্মী বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন