ঢাকা শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫

নেপাল থেকে আসবে আরও ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২৫, ০১:৪৯ এএম

* বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরা নেপালে করবেন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র

বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ-নেপাল যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির ৭ম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। সভায় নেপাল থেকে আরও ২০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আনার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। যা খুব শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন দুই দেশের কর্মকর্তারা। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের বেসরকারি উদ্যোক্তারা নেপালে জলবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে যাতে আগ্রহী হয় সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে আয়োজিত সভায় দুই দেশের বিদ্যুৎ খাতে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়। সভায় বাংলাদেশের পক্ষে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ এবং নেপালের পক্ষে সে দেশের বিদ্যুৎ, পানি সম্পদ ও সেচ সচিব চিরঞ্জীবী চাটৌট নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। এ সময় বাংলাদেশ ও নেপালের যৌথ বিনিয়োগে নেপালে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, আন্তঃসংযোগ গ্রিড লাইন ব্যবহার করে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পরিবহন ভারতের ভূখ- অতিক্রম করবে। ফলে এ বিষয়টি বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করার বিষয়ে দুই দেশের প্রতিনিধিরা একমত হন।

এ ছাড়া, ভেড়ামারা অংশে বিদ্যমান এইচভিডিসি সিস্টেম ব্যবহার করে আরও ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করার ব্যাপারে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। নেপালে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বেসরকারি উদ্যোগে বিনিয়োগের বিষয়েও আলোচনা হয়। শীতকালে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা উৎপাদন ক্ষমতার চেয়ে কম থাকায় এ সময়ে বাংলাদেশ থেকে বর্তমান সঞ্চালন কাঠামো ব্যবহার করে নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানির বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

সভায় জানানো হয়, বিদ্যুৎ খাতে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার সম্প্রতি বিদ্যুতের বিশেষ আইন বাতিল করেছে। সে মোতাবেক ভারতের জিএমআর গ্রুপ কর্তৃক নেপালে বাস্তবায়িতব্য আপার কার্নালি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের ৫শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি সম্পর্কীয় এলওআই বাতিল করা হয়। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিষয়টি এ বছরের ২৮ আগস্ট জিএমআরকে জানানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।

এ সময় বাংলাদেশ ও নেপালে নবায়নযোগ্য জ¦ালানির সম্প্রসারণের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও দক্ষতা বিনিময়ে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতার বিষয় পর্যালোচনা করা হয়। এ ছাড়া, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত রুফটপ সোলার প্রোগ্রামের আওতায় প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের অভিজ্ঞতা বিষয়েও নেপালের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা হয়। জ¦ালানি দক্ষতা ও জ¦ালানি অডিট সংক্রান্ত কার্যক্রমে নেপাল সরকারকে সহযোগিতা প্রদানের বিষয়টিও আলোচিত হয়।

জেএসসি সভায়, বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের কার্যক্রম গ্রহণের বিষয়ে উভয় দেশ সম্মতি প্রকাশ করে। এ সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিপিএমআই’র প্রশিক্ষণ সক্ষমতার বিবরণ তুলে ধরা হয়। দ্বিপাক্ষিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ এবং বাংলাদেশ-ভারত ও নেপালের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক সমঝোতার বিষয়েও আলোচনা করা হয়। এর আগের দিনও বাংলাদেশ-নেপাল জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের ৭ম সভার আগের দিন ২৬ নভেম্বর একই একই স্থানে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রসঙ্গত, বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-নেপাল জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটি ও জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের ষষ্ঠ সভা গত বছর নেপালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কমিটির পরবর্তী ৮ম সভা আগামী বছরের অক্টোবরে নেপালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।