ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণা চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তথ্য বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেনÑ শাহানা শিকদার, সামীর ও হানিফ ব্যাপারী। গত বুধবার মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সুমিলপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে সিআইডির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ ইউনিট। অভিযুক্তরা রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় ফ্ল্যাট বিক্রির নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করছিল বলে জানিয়েছে সিআইডি।
গতকাল বৃহস্পতিবার সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে একই ফ্ল্যাট বিক্রির কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। তারা প্রথমে ফ্ল্যাট বিক্রির প্রস্তাব দিত। পরে ফ্ল্যাটটি মর্টগেজ রাখা আছে, মালিকের জরুরি টাকার প্রয়োজন বা দ্রুত টাকা দিলে রেজিস্ট্রি করে দেবেÑ এভাবে তারা ধাপে ধাপে অগ্রিম টাকা নিত। আবার সময়ক্ষেপণ করে আরও টাকা দাবি করত।
তিনি বলেন, চক্রটি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ ও প্রলোভন দেখিয়ে রুপা (ছদ্মনাম) নামে এক ভুক্তভোগীকে ফ্ল্যাট কেনার জন্য আকৃষ্ট করে। ফ্যাট কেনার আগ্রহ জানালে কৌশল অবলম্বন করে চক্রটি গত আগস্ট মাসে কয়েক ধাপে রুপার কাছ থেকে বায়নাপত্রের মাধ্যমে ৪১ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে রেজিস্ট্রি না দিয়ে চক্রের সদস্যরা গড়িমসি শুরু করে। এরপর গত ২৭ আগস্ট ধানমন্ডিতে অবস্থিত একটি ব্যাংকের সামনে চক্রের সদস্যরা রুপা ও তার সহকারীকে মারধর করে মর্টগেজ টোকেন ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রুপা হাজারীবাগ থানায় গত ৬ অক্টোবর মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তভার গ্রহণের পর সিআইডি ব্যাংক লেনদেন যাচাই, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য বিশ্লেষণ এবং ভুক্তভোগীর বর্ণনার ভিত্তিতে প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে সিআইডি কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন বলেন, চক্রটি একই ফ্ল্যাট দেখিয়ে এর আগেও কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়েছে। এর মধ্যে শাহাদাৎ হোসেন নামে একজনের কাছ থেকে ১২ লাখ, মাহবুবুর রহমানের কাছ থেকে ৯ লাখ ৪০ হাজার এবং নান্নু মিয়া ইমনের কাছ থেকে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা নেওয়ার তথ্য পেয়েছে সিআইডি। শুধু তাই নয়, তদন্তে দেখা গেছে, গত ২৮ আগস্ট চক্রটি একই ফ্ল্যাট ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকায় রওশন আরা নামে এক নারীর কাছে রেজিস্ট্রিও করে দিয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পূর্ণ রহস্য উদঘাটন এবং চক্রের অন্যা সদস্যদের শনাক্তে মামলার তদন্ত চালাচ্ছে সিআইডি।

