২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বেশি শহিদ হয়েছেন বলে দাবি করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘অথচ কিছু লোকের কথায় মনে হয় তারাই সব করেছে।’ বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আন্দোলনে কারা বেশি অংশগ্রহণ করেছে, সে অনুযায়ী গুরুত্ব পাওয়া উচিত না? কিন্তু আমাদের কিছু কিছু সংগঠনের, কিছু লোকের কথায় মনে হয়, তারাই সব করেছে। কথার ভেতরে মনে হয় তারাই সব করেছে আরকি।’ তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘ভাই, ভেতরে ভেতরে করেছেন কিন্তু বাহিরে আসার সাহস পাননি কেন?’
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী গণআন্দোলনে শহিদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অর্জিত বিজয়কে বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার নানা অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সেই অপচেষ্টা মোকাবিলা করতে হবে।’
বিএনপিই একমাত্র দল, যাদের দীর্ঘ সময় রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘জনগণের সমর্থন পেলে সেসব অভিজ্ঞতা জনকল্যাণে কাজে লাগানো হবে। একই সঙ্গে অতীতের ভুলগুলো থেকে পাওয়া শিক্ষা কাজে লাগানো হবে।’
বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক ফোরামের এই নেতা বলেন, ‘আমাদের লড়াইকে বিভ্রান্ত করার অনেক চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু তা সফল হয়নি। একবার ভাবুন, এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন যখন অত্যন্ত শক্তিশালী, সেই সময়ে জাতির সঙ্গে বেইমানি করে দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে গিয়েছিল।’
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্লট দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদ- প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্লট বরাদ্দের মামলায় তার (শেখ হাসিনার) ২১ বছরের সাজা হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে কারও আইন-আদালতে হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর সেখানে প্রভাব বিস্তার করার কিছু নেই। হাসিনার গড়া আদালত, হাসিনার গড়া ট্রাইব্যুনালে তার বিচার হয়েছে।’
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার শুরু হয়েছে। এ রায় অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বস্তি পাবে, শহিদ পরিবার স্বস্তি পাবে।’
আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন। এতে আরও বক্তব্য দেন নব্বইয়ের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতারা।

