শনিবার, ০৯ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সম্পাদকীয়

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ০১:১৮ এএম

প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

সম্পাদকীয়

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ০১:১৮ এএম

প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

একটি রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব তার নাগরিকদের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যখন এই দায়িত্ব পালনে ঘাটতি দেখা দেয়, তখন কেবল ব্যক্তির জীবনই বিপন্ন হয় না, বরং সমাজে নেমে আসে অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা এবং ভয়ের সংস্কৃতি। সম্প্রতি গাজীপুরে সাংবাদিককে প্রকাশ্যে হত্যা ও আরেক সাংবাদিককে মারধরের ঘটনা, সেই ভয়াবহ বাস্তবতারই প্রতিফলন।

স্বাধীন ও নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যম একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অপরিহার্য অংশ। সাংবাদিক হত্যা মানে কেবল একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা নয়, এটি বাকস্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। গাজীপুরের এ বর্বর হত্যাকা- গোটা জাতিকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এর পেছনে প্রভাবশালী কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীর হাত রয়েছে কি না, সেটি এখনো তদন্তাধীন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যদি সাংবাদিকরাই নিরাপদ না থাকেন, তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? যদিও গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় নগরীর বাসন থানায় মামলা হয়েছে এবং সন্দেহভাজন পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তবু জনমনে শঙ্কা কাটেনি।  

বর্তমানে দেশ একটি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে চলছে, যার প্রধান দায়িত্ব একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজন। কিন্তু আশঙ্কার বিষয় হলো- এ সরকারের সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতির টানাপড়েন, ক্ষমতার পালাবদল নিয়ে অস্থিরতা এবং প্রশাসনিক শৈথিল্য এসব মিলিয়ে অপরাধীচক্র, রাজনৈতিক সন্ত্রাসী ও দুর্বৃত্তরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে অপরাধের হার যেমন বাড়ছে, তেমনি বিচারহীনতার সংস্কৃতিও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলা যায়।

এমন প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে জননিরাপত্তার প্রশ্নে। কেবল কয়েকটি মামলা করেই দায়িত্ব শেষ করে ফেললে চলবে না। অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এ ধরনের ঘৃণ্য কর্মকা- করার সাহস না পায়।

এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠছে। জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী বছরটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল খুবই নাজুক, যা এখনো চলমান। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে চরম উৎকণ্ঠা বিবেচনায় দেশজুড়ে চলে যৌথ বাহিনীর ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযান কর্মসূচি। কিন্তু তা খুব একটা কাজে দেয়নি। থেমে নেই অপরাধীদের দৌরাত্ম্য।

তবে অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশের নিরাপত্তা বজায় রাখার চেষ্টা করছে। তবু অপরাধ দমনে যে ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি, তা এখন পর্যাপ্ত মাত্রায় বাস্তবায়িত হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অনুশীলন এবং প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। তাদের আরও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে অপরাধ দমন, অপরাধীদের শনাক্তকরণ এবং তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে। পাশাপাশি, পুলিশ বাহিনীর মধ্যে দুর্নীতি বন্ধ করা এবং সুশাসন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। জনগণ যদি পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে না পারে, তবে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে না।

অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত, এ ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কোনো প্রকার আপস না করা। দেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছে। সামনে নির্বাচন, রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে, আন্তর্জাতিক নজরও রয়েছে আমাদের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির ওপর। এমন সময়ে যদি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়বে, যা দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্রের জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

আমরা আশা করব, সরকার সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কোনো অবস্থাতেই অপরাধীদের রক্ষা করা যাবে না। প্রতিটি নাগরিকের জীবনই রাষ্ট্রের কাছে সমান মূল্যবান। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মৌলিক শর্ত হলো প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সে দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!