রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এস এম রায়হান মিয়া

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫, ১২:৫৩ এএম

রাজনীতি, মিডিয়া এবং কর্মক্ষেত্রে ভদ্রতার অবমূল্যায়ন

এস এম রায়হান মিয়া

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫, ১২:৫৩ এএম

রাজনীতি, মিডিয়া এবং কর্মক্ষেত্রে ভদ্রতার অবমূল্যায়ন

আমরা এমন এক সামাজিক পরিসরে অবস্থান করছি, যেখানে সভ্যতা ও শালীনতার মূল্যায়ন ক্রমেই অবমূল্যায়িত হচ্ছে; বরং ভদ্রতা প্রায় ‘মূর্খতার’ প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। আধুনিক সমাজে, যেখানে দ্রুততা, স্বার্থপরতা ও আত্মকেন্দ্রিক মনোভাবকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, সেখানে ভদ্র আচরণের প্রতি সম্যক শ্রদ্ধার অভাব প্রকট। তথাপি নৈতিক ও সামাজিক বিশ্লেষণ প্রমাণ করে, সভ্যতার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, স্থায়ী সম্মান এবং নৈতিক প্রভাবের ক্ষেত্রে ভদ্রতা সর্বশেষে বিজয়ী হয়। রূঢ়চেতা ব্যক্তি সাময়িক সুবিধা বা স্বার্থ অর্জনে সক্ষম হোক, তার সামাজিক ও নৈতিক প্রভাব সীমিত এবং অস্থায়ী। অন্যদিকে নৈতিক ও শিষ্টচারণার অধিকারী ব্যক্তি দীর্ঘমেয়াদে সব শ্রেণির মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেয়, যা সমাজে সহনশীলতা, সংবেদনশীলতা এবং নৈতিক সংহতির সূক্ষ্ম স্তর তৈরি করে।

আমাদের সামাজিক ও নৈতিক পুনর্গঠনের জন্য ভদ্রতার পুনর্জাগরণ অপরিহার্য। এটি শুরু হতে পারে পারিবারিক শিক্ষার মাধ্যমে, যেখানে সন্তানদের প্রতি অভিভাবকের দৃষ্টিভঙ্গি, সহনশীলতা এবং সৌজন্যপ্রদ আচরণ তাদের মানসিক ও নৈতিক কাঠামোতে প্রতিফলিত হয়। যদি সন্তানদের আমরা ভদ্রতা, সহমর্মিতা এবং ন্যায্যতার শিক্ষা দিই, তবে তারা পরবর্তী জীবনে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হবে। এটি একটি ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া, যা এক দিনে পরিণতি লাভ করবে না; তবে সূচনা ছাড়া তা কখনোই বাস্তবায়িত হবে না।

বর্তমান সমাজে দৈনন্দিন ব্যবহৃত শব্দসমূহÑ‘ধন্যবাদ’, ‘দুঃখিত’, ‘অনুগ্রহ করে’, ‘ক্ষমা করবেন’Ñপ্রায় অব্যবহৃত ও মর্যাদাহীন হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তি এবং মোবাইলের আধিপত্যে চোখে চোখ রেখে সম্বাদ স্থাপন, সিগন্যাল অনুযায়ী ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বৃদ্ধকে সহায়তা করা প্রায় বিলুপ্ত। অথচ এই ক্ষুদ্র সামাজিক প্রয়াসই সহনশীলতা, সংবেদনশীলতা এবং নৈতিক সংহতির সূক্ষ্ম স্তর প্রতিষ্ঠা করে। অতীতের সামাজিক শালীনতা এবং সভ্যতা দৈনন্দিন আচরণের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল; বর্তমান সমাজে তা ‘অযৌক্তিক’ বা ‘অসামাজিক’ কাজ হিসেবে দেখানো হয়।

পারিবারিক পরিবেশে ভদ্রতার অবক্ষয় বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। নৈতিক শিক্ষা এবং শিষ্টাচরণের প্রাথমিক ভূমিকা পরিবারে। মা-বাবার আচরণ, তাদের স্বাভাবিক ব্যবহারের মাধ্যমে, সন্তানদের নৈতিক ও সামাজিক আচরণে প্রভাবিত হয়। ব্যস্ততা, হতাশা, ক্রোধ এবং উদ্বেগের ছাপ কথ্য ও আচরণে ছড়িয়ে পড়লে শিশুর মধ্যে অসহিষ্ণুতা, শ্রদ্ধাহীনতা ও অহংকারী মনোভাব গঠিত হয়। সন্তান যখন দেখছে অভিভাবক রিকশাওয়ালাকে রূঢ়ভাবে সম্বোধন করছেন বা মোবাইলে রূঢ় ব্যবহার করছেন, তখন তার ভদ্রতার শিক্ষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এর পরিণামে শিশু বিদ্যালয়, রাস্তাঘাট এবং কর্মপরিবেশে অপমান, চিৎকার এবং অসৌজন্য আচরণের প্রবণতা তৈরি করে। সমাজে ভদ্রতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য, প্রথমেই পরিবারকে নৈতিক, সংযত এবং শিষ্টচারণায় আত্মসংযমী হতে হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শালীনতার সংকট সমাজের এক গভীর সমস্যার দিক নির্দেশ করে। অতীতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক মানবিক শ্রদ্ধা এবং মমতার ভিত্তিতে গঠিত হতো। বর্তমান পরিস্থিতিতে তা ‘চুক্তিভিত্তিক লেনদেন’ এবং ফলাফল কেন্দ্রিক প্রতিযোগিতায় সীমাবদ্ধ। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের মধ্যে মানবিক সংযোগের অভাব শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্যÑমানুষকে মানুষ হিসেবে গঠনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। শিক্ষার্থীরা একে অপরকে অপমান করে, শিক্ষকের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করে এবং শিক্ষকের মমতাশীল দৃষ্টিভঙ্গি ক্রমে বিলুপ্ত হয়। এটি সমাজে দীর্ঘমেয়াদি নৈতিক দুর্বলতার সূচনা করে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভদ্রতার অবক্ষয় সমাজে আরও গভীর প্রভাব ফেলে। সামাজিক মিডিয়ায় গালি, ট্রলিং এবং চরিত্রহানি ‘কুলনেস’ বা আধুনিকতার প্রতীক হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে। ভার্চুয়াল জগতে এ প্রক্রিয়া বাস্তব জীবনে যুব সমাজে সহনশীলতা, শ্রদ্ধা এবং যুক্তিবাদী বিতর্কের অভাব তৈরি করছে। এ প্রক্রিয়ায় যুব সমাজ ভিন্নমতের প্রতি সহিষ্ণুতাহীন হয়ে উঠছে, যা ভবিষ্যতের সমাজে বিভাজন এবং সংঘাতের জন্ম দিতে পারে।

ভদ্রতা কখনো দুর্বলতার প্রতীক নয়; বরং এটি আত্মসম্মান, নৈতিক শক্তি এবং সংযমের প্রকাশ। সমাজে রূঢ়তা, অহংকার এবং বেপরোয়া আচরণকে ‘যোগ্যতা’ হিসেবে সমর্থন বিপজ্জনক আদর্শের উত্থান ঘটায়। প্রকৃত ভদ্র ব্যক্তি সংযমী, নৈতিক এবং সংবেদনশীল, যা সামাজিক সুশাসন, কর্মপরিবেশে সমন্বয় এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি স্থাপন করে।

কর্মক্ষেত্রে সৌজন্যহীন সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠান এবং মানবসম্পদকে ক্ষয় করে। প্রতিযোগিতা এবং হুমকিমূলক মনোভাব সহানুভূতির স্থান হরণ করে। সহকর্মীদের মধ্যে সহমর্মিতা কমে যায়; কেউ অসুস্থ বা ব্যক্তিগত সমস্যায় থাকলে তাকে সহযোগিতা না করে, বরং সুবিধার সুযোগ হিসেবে দেখা হয়। যদি করপোরেট বা প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতা বিলুপ্ত হয়, তবে সে প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হবে না।

রাজনীতির মঞ্চে সৌজন্য আজ স্লোগান মাত্র। অতীতে রাজনৈতিক বিতর্ক আদর্শ, যুক্তি এবং সভ্য বিতর্কের মাধ্যমে গঠিত হতো; বর্তমান পরিস্থিতিতে নেতারা প্রতিপক্ষকে ‘চোর’, ‘ডাকাত’, ‘গুন্ডা’ আখ্যায়িত করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কর্মীরাও এ শিষ্টাচারহীন মনোভাব গ্রহণ করছে। টকশো, মঞ্চে বক্তৃতা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তেজনা, অপমান এবং চিৎকারকে ‘সাধারণ’ বা ‘প্রাসঙ্গিক’ মনে করা হচ্ছে। তরুণ প্রজন্ম এ প্রক্রিয়ায় শেখছে, ‘শ্রদ্ধা নয়, শক্তি প্রাধান্য পায়’, যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের জন্য মারাত্মক হুমকি।

ধর্মীয় ভদ্রতা ও সহনশীলতা আজ কোথায়? সব ধর্মই ভদ্রতা, ক্ষমাশীলতা এবং সহানুভূতির শিক্ষা দেয়। ইসলাম বলে, ‘যদি ক্ষমা করতে পারো, সেটাই মহান গুণ।’ হিন্দুধর্মে রয়েছে ‘অহিংসা পরম ধর্ম’। খ্রিস্টধর্মেও বলা হয়েছে, ‘প্রতিপক্ষ তোমার গালে চড় মারলে, অন্য গাল উপস্থাপন করো।’ কিন্তু আজ আমরা ধর্মের শাস্ত্রকে বাহ্যিক আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে সীমাবদ্ধ করেছি। ধর্মের মূল দর্শনÑভদ্রতা, সহানুভূতি ও ন্যায়বোধ লোপ পাচ্ছে। ধর্মীয় গোঁড়ামি ভদ্রতার চর্চাকে বিলুপ্ত করছে।

গণপরিবহনে ভদ্রতার সংকট এক প্রকট বাস্তবতা। বাস, ট্রেন এবং পাবলিক পরিবহন ব্যবস্থায় হট্টগোল, চিৎকার, ধাক্কাধাক্কি এবং সহমর্মিতার অভাব লক্ষ্য করা যায়। একজন ভদ্র যাত্রী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে, কিন্তু তা প্রায়ই সামাজিক সচেতনতার অভাবের কারণে সম্ভব হয় না। গণপরিবহন ব্যবস্থায় শিষ্টাচার এবং সামাজিক সংহতি অগ্রাহ্য করা মানে সমগ্র শহরের নৈতিক ও সামাজিক বিনিয়োগের অবক্ষয়।

প্রেমের সম্পর্কেও ভদ্রতার ক্ষয় লক্ষ্যণীয়। আজকাল প্রেম সম্পর্ক দ্রুত, স্বার্থপর এবং দাবিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোয় সংযোগ স্থাপন ও বিচ্ছেদ ঘটে সহজেই। সম্পর্কের ক্ষেত্রে আগ্রাসন, সন্দেহ, ইগো এবং অসম্মান প্রাধান্য পাচ্ছে। ভদ্রতার অভাব সম্পর্ককে বিনষ্ট করছে, যা সমাজে নৈতিক দুর্বলতার সংকেত।

শিশুদের মধ্যে ভদ্রতার হ্রাস সমাজের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষয় নির্দেশ করে। তারা বড়দের থেকে রূঢ় আচরণ শেখে; মোবাইলের প্রাধান্য চোখে চোখ রেখে কথাবার্তা, সালাম, শ্রদ্ধা এবং সহমর্মিতা চর্চা বন্ধ করে দিয়েছে। পরিবার, মিডিয়া এবং সামাজিক উদাসীনতা শিশুর নৈতিক ও সামাজিক চেতনা ক্ষয় করছে।

ভদ্রতা একটি সামাজিক পুঁজি। এটি বিনিয়োগ করলে বহুগুণে প্রত্যাবর্তন ঘটে। কাউকে সাহায্য, শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং ন্যায়সঙ্গত আচরণ দীর্ঘমেয়াদে সমাজে সম্মান এবং নৈতিক প্রভাব প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিবাদও হতে পারে ভদ্র, যুক্তিপূর্ণ এবং নৈতিকভাবে সংযমী।

আন্তর্জাতিক স্তরে ভদ্রতা আমাদের পরিচয় বহন করে। বিদেশে একজন বাংলাদেশি যখন ট্রেনে বৃদ্ধকে সিট দেন, তখন তার দেশের প্রতি সমগ্র জাতির নৈতিক ও সামাজিক মূল্যায়ন স্থাপিত হয়। কনভারসেল, অসৌজন্য এবং রূঢ় আচরণ জাতির মর্যাদা হ্রাস করে।

অতএব, ভদ্রতার পুনর্জাগরণে সংস্কৃতির ভূমিকা অপরিসীম। সাহিত্য, নাটক, সংগীত এবং সাংস্কৃতিকচর্চার মাধ্যমে সামাজিক শালীনতা এবং নৈতিক বার্তা ছড়িয়ে দিলে এটি মানুষের দৈনন্দিন আচরণে প্রতিফলিত হবে। পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মপরিবেশ, রাজনীতি এবং সামাজিক মিডিয়ায় ভদ্রতার চর্চা সামাজিক স্থিতিশীলতা, নৈতিকতা এবং সাংস্কৃতিক সংহতি বৃদ্ধির অবিচ্ছেদ্য উপাদান।

উপসংহার:

আধুনিক সমাজে ভদ্রতা ও শালীনতার অবমূল্যায়ন কেবল ব্যক্তিগত আচরণের সংকট নয়; এটি নৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সমন্বয়ের গভীর অবক্ষয়ের সূচক। পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র, রাজনৈতিক মঞ্চ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিটি স্তরে রূঢ়তা, অহংকার এবং সংযমহীন আচরণের আধিপত্য সমাজের মূল্যবোধকে ক্ষয় করছে। শিশুদের মানসিক ও নৈতিক কাঠামো গঠনের প্রাথমিক দায়িত্ব পরিবারের ওপর। বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণা, সহনশীলতা এবং ভদ্র আচরণ সন্তানদের নৈতিক চেতনায় স্থায়ী প্রভাব ফেলে। পারিবারিক অভ্যাসের অভাবে শিশুদের মধ্যে অসহিষ্ণুতা, শ্রদ্ধাহীনতা এবং আত্মকেন্দ্রিক মনোভাব বিকাশ লাভ করছে, যা ভবিষ্যতে সামাজিক বিভাজন ও সংঘাতের বীজ রোপণ করছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যা একসময়ে শালীনতা, মানবিক সংযোগ এবং নৈতিক শিক্ষার কেন্দ্র ছিল, আজকাল ক্রমেই ফলাফলভিত্তিক প্রতিযোগিতা ও রূঢ় ব্যবহারের মেলবন্ধনে সীমাবদ্ধ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে মানবিক সম্পর্কের হ্রাস শিক্ষার আসল উদ্দেশ্যÑমানুষকে মানুষ হিসেবে গঠনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভদ্রতার অবক্ষয় এবং ট্রোলিং বা চরিত্রহনন ‘কুলনেস’ বা আধুনিকতার প্রতীক হিসেবে উদযাপিত হওয়া তরুণ প্রজন্মকে সহনশীলতা, শ্রদ্ধা এবং যুক্তিবাদী বিতর্ক থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে সৌজন্য ও মানবিক আচরণের অনুপস্থিতি প্রতিষ্ঠানকে ক্ষয় করছে। হুমকি, প্রতিযোগিতা এবং সহমর্মিতার অভাব সংস্থার দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ও সমন্বয়হীন মনোভাবের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রাজনৈতিক মঞ্চে শালীনতা ও সংযমের অভাব গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ক্ষয় ঘটাচ্ছে, যেখানে বিতর্ক ও যুক্তি বদলে চিৎকার, অপমান এবং প্রাধান্যবোধের আধিপত্য লক্ষ্য করা যায়।

অতএব, ভদ্রতা কেবল ব্যক্তিগত সৌজন্য নয়; এটি নৈতিক শক্তি, আত্মমর্যাদা, সামাজিক বিনিয়োগ এবং সাংস্কৃতিক সংহতির প্রতীক। পরিবার থেকে শুরু করে শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র, রাজনীতি, সামাজিক মিডিয়া এবং সংস্কৃতির প্রতিটি স্তরে শালীনতা ও মানবিক মূল্যবোধের পুনঃপ্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। নাটক, সাহিত্য, সংগীত এবং সাংস্কৃতিক উদ্যোগের মাধ্যমে ভদ্রতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া সমাজে নৈতিক সচেতনতা, সহানুভূতি এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির অবিচ্ছেদ্য উপায়। শুধু এ সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা একটি মানবিক, নৈতিক এবং সভ্য সমাজের কাঠামো পুনর্নির্মাণ করতে পারি, যেখানে সম্মান, সংযম এবং সামাজিক সুশাসন মানুষের দৈনন্দিন আচরণের অঙ্গ হবে।

এস এম রায়হান মিয়া, কলামিস্ট ও বিশ্লেষক 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!