মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রেজাউল করিম খোকন : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার, কলাম লেখক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২৫, ১১:৩৩ পিএম

আজও হয়নি পার্বত্য শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন 

রেজাউল করিম খোকন : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার, কলাম লেখক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২৫, ১১:৩৩ পিএম

আজও হয়নি পার্বত্য শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন 

১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সাল থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বায়ত্তশাসনের দাবি ওঠে। এই দাবিতে ১৯৭২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এবং ১৯৭৩ সালে সংগঠনটির সশস্ত্র শাখা কথিত শান্তিবাহিনী গঠন হয়। শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। একপর্যায়ে ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি। এটি পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। চুক্তির আওতায় গঠিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ১টি শক্তিশালী (ভারতের অঙ্গরাজ্যের আদলে) আঞ্চলিক পরিষদ, ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুবিষয়ক টাস্কফোর্স  এবং ৩ জেলায় ৩টি স্বায়ত্তশাসিত পার্বত্য জেলা পরিষদ। ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) মোট জনসংখ্যা ছিল ১৮,৪২,৮১৫ জন। তবে ধারণা করা হচ্ছে এ জনসংখ্যা এখন ২০ লাখের মতো। যা দেশের ১১.১৯ শতাংশ আয়তনের মধ্যে ১.১৬ শতাংশ মানুষের বসবাস। জনশুমারির হিসাব মতে এর মধ্যে, উপজাতি মোট: ৯,২০,২১৭ জন (৪৯.৯৪%) এবং বাঙালি ৫০.০৬ শতাংশ তথা ৯,২২,৫৯৮ জন। শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে। এর মূল কথা ছিল, পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ থাকবে এবং সেজন্য বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ও আইন প্রণয়নের কথা বলা হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল তিন পার্বত্য জেলার স্থানীয় সরকার পরিষদ সমন্বয়ে একটি আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করা হবে। উপজাতীয় আইন এবং সামাজিক বিচারকাজ এই পরিষদের অধীনে থাকবে; পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা; উপজাতীয়দের ভূমি মালিকানা অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া; পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা ইত্যাদি। শান্তি চুক্তির ধারাবাহিকতায় বেশকিছু প্রতিষ্ঠান সে অঞ্চলে গঠন করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচারহীনতা কোনো বিচ্ছিন্ন বাস্তবতা নয়।

এটি রাষ্ট্রীয় কাঠামো, প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক অনীহার সমন্বিত ফল। ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সত্ত্বেও পাহাড়ে যে সহিংসতা, ভূমি দখলের সংস্কৃতি অব্যাহত রয়েছে, তা এ বিচারহীনতাকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে পাকিস্তান আমলে। সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে স্বাধীনতার পরও। এ বিচারহীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা দূর করতে পার্বত্য চুক্তির ধারাগুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন, ভূমি কমিশনের পুনঃসক্রিয়করণ ও একটি স্বাধীন মানবাধিকার তদন্ত কমিশন গঠন। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা বরাবরই রাজনৈতিক নেতাদের অনাগ্রহ দেখেছি। আসলে শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন হওয়া জরুরি। তাহলেও কিছুটা শান্তি সেখানে মিলতে পারে। শান্তি চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত ২৬ বছরে ছয়টি আঞ্চলিক দলের সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ে। এসব দল নিজেরাও অভ্যন্তরীণ বিরোধেও জড়াচ্ছে। 

পাহাড়ে যেটা হচ্ছে, সেটা শোভন নয়। আমরা সেখানে আর কোনো রক্তপাত দেখতে চাই না। আমরা এটাও চাই না যে, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কেউ মৃত্যুবরণ করুক। অন্তর্বর্তী এই সরকার পাহাড়ের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমরা আশা করি, এখন যিনি সরকারপ্রধান তিনি শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন। ফলে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবেন। তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে এখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন। বিশেষ অঞ্চল হিসেবে নিরাপত্তার বাস্তবতায়, সেনাবাহিনী দৃশ্যমান হলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম মূলত আইন ও কাঠামো অনুযায়ী, উপজাতীয় নেতৃত্বই এখানে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আরও সহজভাবে বললেÑ পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন করছে উপজাতিরাই। তবে সংখ্যায় অর্ধেক জনসংখ্যা হলেও রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বে, বাঙালিরা প্রান্তিক। এই বাস্তবতা থেকেই উঠে আসে দ্বন্দ্ব, অভিযোগ, এবং ‘সেনা শাসন বনাম উপজাতীয় আধিপত্য’ বিতর্ক। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে গণতন্ত্র, সংলাপ ও সমতার ভিত্তিতে একটি নতুন কাঠামো নির্মাণের ওপর। বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে সন্ত্রাস ও হত্যার ইতিহাস দীর্ঘ ও বেদনাদায়ক: খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী ঘটনা তারই অংশ। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম ‘এক্সক্লুডেড এরিয়া’ হিসেবে পরিচালিত হওয়ার ফলে এ অঞ্চল সরাসরি ব্রিটিশ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। তখন স্থানীয় পাহাড়ি রাজা ও সম্প্রদায়কে আঞ্চলিক শাসনের অধিকার দেওয়া হয়। জমির মালিকানা ও প্রশাসনিক ক্ষমতা মূলত উপজাতীয় সমাজের হাতে রাখা হয়। ফলে তাদের সামাজিক কাঠামো ও স্বায়ত্তশাসন মজবুত ছিল। ব্রিটিশ শাসন শেষে পাকিস্তান আমলেও পার্বত্য অঞ্চলে প্রশাসনিক অবহেলা, বৈষম্য ও শোষণ চলতে থাকে; সেই সময় কেন্দ্রীয় শাসন স্থানীয় আদিবাসী ও বাঙালিদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে ‘বিভক্ত কর ও শাসন কর’ নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখে।

এর ফলে জমি দখল, প্রশাসনিক নিপীড়ন ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বেড়ে সামাজিক অস্থিরতার ভিত্তি গড়ে ওঠে এবং পর্যায়ক্রমে সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থান ঘটে; কখনো তারা নিজস্ব জাতিগত স্বার্থ রক্ষা করতে, আবার কখনো বাইরের রাজনৈতিক প্রভাবে হত্যা, অপহরণ ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িত হয়ে পড়ে।

১৯৬০-এর দশকে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে হাজার হাজার চাকমা ও অন্যান্য পাহাড়ি জনগণ বাস্তুচ্যুত হয়; অনেকেই ভারতে ও মিয়ানমারে আশ্রয় নেয়। এই বাস্তুচ্যুতি পার্বত্য অঞ্চলে সামাজিক-অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করে এবং বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে গভীর অসন্তোষের বীজ বোনা হয়। স্বাধীনতার পরেও পরিস্থিতি পালটায়নি। স্বাধীনতার পর প্রথম আওয়ামী সরকারের অধীনে পার্বত্য অঞ্চলে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে স্থানীয় সশস্ত্রবিরোধী ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করা হয় এবং বসতি সম্প্রসারণের প্রক্রিয়ায় কিছু নিরীহ বাঙালি পরিবারও লক্ষ্যবস্তু হয়। তখনকার রাজনৈতিক সমর্থক ও একশ্রেণির বুদ্ধিজীবী এই পরিস্থিতিকে রাজনৈতিকভাবে সমর্থন দিতেন এবং অনেক ঘটনাই স্থানীয় প্রশাসন ও মিডিয়ায় বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হতো; এতে পাহাড়ি জনগণের মধ্যে বিভাজন আরও গভীর হয়। ১৯৭২ সালে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) আদিবাসী জনগোষ্ঠীর স্বায়ত্তশাসন, জমির অধিকার ও সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিশ্চিতের দাবি তুলে ধরলেও সংঘাত থামেনি। চুক্তির পর অনেক জায়গায় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো স্থানীয় রাজনীতি ও প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করে; চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক দখলদারির ঘটনা নিত্যসংবাদে পরিণত হয়। ফলে পার্বত্য অঞ্চলে বাস্তব উন্নয়ন কাজেও বাধা এসেছে। যদিও সরকারি নীতিতে প্রায়ই ‘পাহাড়িদের উন্নয়ন’কে গুরুত্ব দেওয়া হয়, বরং স্থানীয় বাঙালিদের দুরবস্থার বিষয়টি নানাবিধ কারণে উপেক্ষিত থেকে যায়। এখানে হাজার হাজার নিরীহ মানুষের হত্যার বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা আরো দুঃসাহসী হয়ে ওঠে। বলা হয়, চাকমা জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষিতের হার তুলনামূলকভাবে উন্নত এবং চাকমা নারীদের মধ্যে শিক্ষকতা পেশায় অংশগ্রহণও উল্লেখযোগ্য; অন্যদিকে কয়েকটি এলাকার বাঙালি জনগোষ্ঠীর শিক্ষাগত হার কমে গেছে। এ ছাড়া কিছু পাহাড়ি এলাকায় জমি লিজ দেওয়া ও পরিচালনার প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, যা রাষ্ট্রীয় ন্যায়বিচার ও নাগরিক অধিকারের দিক থেকে বিতর্কিত।

এই পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা ও মাঠপর্যায়ের তথ্য অনুযায়ী সূত্রবিহীনভাবে ছড়ানো ঝুটো অভিযোগ, সীমান্তের বাইরের প্রশিক্ষণ ও সাহায্য ইত্যাদি প্রতিহত করতে হবে। তবে পুরোটাই কেবল শক্তি প্রদর্শন করে সমাধান না করে আইনশৃঙ্খলা বজায় রেখে প্রমাণভিত্তিক তদন্ত, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক ঐক্য রক্ষার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করাও প্রয়োজন। একই সঙ্গে সামরিক ও সিভিল প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো জরুরি, যাতে নিরাপত্তা বজায় রেখে জনসাধারণের আস্থা পুনঃস্থাপন করা যায়। পার্বত্য শান্তি নামক দেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী কালো চুক্তি বাতিল করা অথবা পার্বত্য সমস্যার পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করে চুক্তি বা নীতি-নবায়ন করা, যেখানে প্রয়োজন হলে ১৯৯৭ সালের চুক্তির দুর্বলতা শনাক্ত করে জনগণের অংশগ্রহণমূলক, বাস্তবভিত্তিক ও ন্যায্য কাঠামোর আওতায় নতুন সমঝোতা গঠন করা হবে। জনগণের আস্থাভিত্তিক নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রকে শক্ত মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। কিন্তু সেই শক্তি প্রয়োগ মানবাধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাস্তবায়ন করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ; এখানে বসবাসকারী চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও বাঙালি-সবাই বাংলাদেশের নাগরিক এবং সবার অধিকার সমান। যে কোনো বিভাজনমূলক শব্দ বা ধারণা জাতীয় ঐক্য ও সার্বভৌমত্বের পরিপন্থি; তাই রাষ্ট্র ও সমাজকে মিলেই কাজ করতে হবে, যাতে পাহাড়ে নিরাপত্তা, ন্যায্যতা ও উন্নয়ন একসঙ্গে প্রতিষ্ঠিত হয়। সামরিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বারবার সতর্ক করেছে যে, সীমান্তের উভয় পাশে সংঘর্ষ-প্রবণতা ও স্বাধীনতাবাদী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট রয়েছে। তাই সীমান্ত তত্ত্বাবধান আরও জোরদার, গোপনীয় গোয়েন্দা তথ্য কার্যকরভাবে ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে পার্বত্য সমস্যার উৎস নির্ণয় ও সমাধান করা দরকার। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আদিবাসীদের অধিকার আন্দোলনকে দেশের সবার অধিকার আন্দোলনে রূপান্তরিত করতে হবে। আদিবাসীরাও এ দেশের মূলধারার মানুষ। তারাও এ দেশের নাগরিক। পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে হলে সেনাবাহিনীর সদিচ্ছা জরুরি বলে মনে করি। এ দেশে কোনো সরকারের কোনো এখতিয়ার ছিল না আদিবাসী অধিকার রক্ষা ও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে। ছিল না, এখনো নেই, ভবিষ্যতেও থাকবে না। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যদি শান্তি ফেরাতে পারে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী একমাত্র শক্তি, তাদের যদি সদিচ্ছা থাকে, তাহলে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি সম্ভব। ১৯৯৭ সালে চুক্তির পর আমরা  ভেবেছিলাম একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। চুক্তির কোন অংশ কখন বাস্তবায়ন করা হবে এ রকম সময় নির্ধারণ করা ছিল না। রাষ্ট্র তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর যে জীবনধারা, তাদের যে মানবাধিকার, ভূমি অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার, নাগরিক অধিকারকে আমরা স্বীকার করতে চাই না। পার্বত্য অঞ্চলে শান্তির খোঁজে প্রায় ২৭ বছর আগে শান্তি চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু শান্তি ফেরেনি, এখনো পড়ছে লাশ, ঝরছে রক্ত। শান্তি চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং দৃষ্টান্তমূলক বিচারই পারে পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে। এর জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!