সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ০১:৩২ এএম

সূর্যোদয়ের দেশে শ্রমের নতুন দিগন্ত

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ০১:৩২ এএম

সূর্যোদয়ের দেশে শ্রমের  নতুন দিগন্ত

জাপান পৃথিবীর অন্যতম উন্নত এবং আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর একটি দেশ। জাপানে আধুনিক প্রযুক্তির উৎপাদন সম্পর্কে সারা বিশ্বেই খ্যাতি রয়েছে। শুধু প্রযুক্তিই নয়, জাপানের রয়েছে অত্যন্ত দক্ষ জনশক্তিও। কর্মীর চাহিদা পূরণের জন্য প্রতিবছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় দক্ষ জনবল নিয়োগ দিয়ে থাকে।  আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (ওগঋ)এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে জাপানের মাথাপিছু আয় ৩৮ হাজার ২১৬ ইউএস ডলার। অধিক উপার্জন এবং উন্নত জীবনযাপনের জন্য জাপান যেতে চাইলে জাপান জব ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাচ্ছেন মিনহাজুর রহমান নয়ন।

জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

বর্তমানে জাপানি ভিসার জন্য সরকারিভাবে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন করে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রথমে জাপানি ভাষা শিক্ষা কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। তারপর বিএমইটির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে পূরণপূর্বক বিএমইটির ইমেইলে পাঠান।  বিএমটির কার্যালয় থেকে ওগ ঔধঢ়ধহ– এর প্রতিনিধি দল দ্বারা বাছাই করা হলে প্রাথমিক ইন্টার্ন পরীক্ষা নেওয়া হবে। গণিত, জাপানি ভাষা ও শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা নেওয়ার পর যোগ্য প্রার্থীদের টেকনিক্যাল ইন্টার্ন কোর্স করিয়ে জাপানে প্রেরণ করা হয়। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে ভিসা সম্পর্কিত কোনো খরচ বহন করতে হয় না। এ ছাড়াও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কাজের ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে খরচ বেশি হলেও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম এজেন্সি পরিচালনা করে দেবে। তবে সরকারি বা বেসরকারি উভয় ভাবেই জাপানে যেতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও ভাষার দক্ষতা থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা

জাপান একটি উন্নত, প্রযুক্তিনির্ভর, আধুনিক ও দক্ষ জনশক্তির দেশ। তাই জাপানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে হলে নিম্মোক্ত যোগ্যতাসমূহ অর্জন করতে হবে:

  • প্রথমেই নির্দিষ্ট কাজে দক্ষ হতে হবে
  • একই সঙ্গে জাপানের ভাষা শিখতে হবে ও শিখার প্রমাণপত্র থাকতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদনের পূর্বে জাপানের ভাষার উপর পরীক্ষা দিতে হয়।
  • জাপানে যাওয়ার জন্য ঞঞঈ কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে আবেদন করতে হবে।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা সর্বনি¤œ ঝঝঈ/সমমান বা ঐঝঈ/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
  • উপরোক্ত শর্তগুলো পূরণ করতে পারলে বাংলাদেশ থেকে যেকোনো বৈধ নাগরিক জাপানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে।

জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদ সম্পন্ন পাসপোর্ট;
  • জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি;
  • তারিখসহ সঠিকভাবে পূরণকৃত ও স্বাক্ষরিত ভিসার আবেদনপত্র;
  • সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি;
  • ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট;
  • নির্দিষ্ট কাজের উপর দক্ষতার প্রমাণপত্র;
  • জাপানি ভাষা শিক্ষার সনদ;
  • মেডিকেল টেস্ট রিপোর্ট;
  • করোনা ভ্যাকসিনেশন সার্টিফিকেট;
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট;
  • যেই কোম্পানিতে কাজের জন্য আবেদন করেছেন তার অফার লেটার।

সরকারিভাবে জাপানে যাওয়ার উপায়

বিএমইটির মাধ্যমে সরকারিভাবে বিনা খরচে জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন প্রেরণ কার্যক্রম চালু রয়েছে। ওগ ঔধঢ়ধহ- ওহঃবৎহধঃরড়হধষ গধহঢ়ড়বিৎ উবাবষড়ঢ়সবহঃ ড়ৎমধহরুধঃরড়হ– এর সহায়তায় বিএমইটি এই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে এই প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট কিছু শর্তাবলী এবং প্রেরণ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

সরকারিভাবে জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে একজন আবেদনকারীর প্রয়োজন হবে-

  • খবাবষ ঘ৫ বা জাপানি ভাষায় পর্যাপ্ত দক্ষতা অর্জন;
  • আবেদনকারীর বয়স ১৮-৩০ বছর হতে হবে;
  • শিক্ষাগত. যোগ্যতা সর্বনি¤œ এসএসসি পাস;
  • আবেদনকারীর উচ্চতা, ছেলে হলে- ৫.৪ এবং মেয়ে হলে ৪.১১ হতে হবে;
  • পূর্বে জাপানে কর্মরত ছিলেন এমন কেউ আবেদন করতে পারবে না।

জাপানে কর্মীর প্রয়োজন হলে ওগ ঔধঢ়ধহ কর্তৃপক্ষ টেকনিক্যাল ইন্টার্ন নিয়োগের চাহিদাপত্র প্রেরণ করেন। বিএমইটির মাধ্যমে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে পত্রিকার প্রকাশ করা হয়। পত্রিকায় উল্লেখিত শর্ত পূরণ করতে পারলে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে আবেদন করতে পারবেন। এ পদ্ধতিতে জাপানে ৫ বছরের জন্য কাজের সুযোগ পাওয়া যায়। আগ্রহী প্রার্থীদের ইগঊঞ– এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আবেদন পত্র ডাউনলোড করতে হবে। তারপর তা সঠিকভাবে পূরণ করে বিএমইটির নির্ধারিত ইমেইল ঠিকানায় পাঠাতে হবে।  আবেদনের পর বিএমইটি কর্তৃপক্ষ তা যাচাই বাছাই করবে। যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক নির্বাচন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। নির্বাচিত প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ঞঞঈ কার্যালয়ে উপস্থিত হতে হবে।

এক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্রের পাশাপাশি জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে আরও প্রয়োজন হবে:

  • ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি;
  • জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ;
  • আধুনিকভাবে প্রস্তুতকৃত একটি জীবন বৃত্তান্ত।
  • জাপানে যাওয়ার জন্য বিএমইটির টেকনিক্যাল ইন্টার্ন পরীক্ষা

উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র নিয়ে আবেদনকারী উপস্থিত হওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করা। তারপর ধারাবাহিকভাবে, টেকনিক্যাল ইন্টার্নদের গণিত ও জাপানি বর্ণমালার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে; শারীরিক সক্ষমতা বিষয়ক পরীক্ষা, যেমন- সিট আপ, পুশ আপ, দৌড়ানো ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করতে হবে। ওগ ঔধঢ়ধহ– এর একটি প্রতিনিধি দল প্রার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণ করবেন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের পরবর্তী প্রশিক্ষণের জন্য সুযোগ দেওয়া হবে।

বাংলাদেশের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (ইগঊঞ) আওতাধীন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তারপর ৬ মাস মেয়াদি প্রি-ডিপার্চার ট্রেনিং সম্পন্ন করতে হবে। প্রি-ডিপার্চার ট্রেনিং সম্পন্ন করে উত্তীর্ণ ব্যক্তিরা টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে প্রাথমিকভাবে ৩ বছরের কর্মচুক্তিতে জাপানে যেতে পারবেন।

কর্মদক্ষতা ও কাজে সফলতা অর্জন করতে পারলে কোম্পানির চাহিদার ভিত্তিতে আরও ২ বছরের জন্য চুক্তি নবায়ন করা যায়।

জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশি

জাপান একটি উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর দেশ হওয়ায় টেকনিক্যাল ইন্টার্ন পদ্ধতিতে আধুনিক কাজে দক্ষকর্মীদের নিয়োগ দেয়। এক্ষেত্রে কম্পিউটার অপারেটর, টেকনিশিয়ান, ইলেকট্রিশিয়ান, মেকানিক ইত্যাদি কাজে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিভিন্ন কোম্পানিতে এই শ্রমিকদের চাহিদা বেশি। তাছাড়া রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমেও বিভিন্ন কাজের ভিসা নিতে পারেন। কৃষিকাজ, হোটেল বয়, ক্লিনার, নার্সিং, ইলেকট্রিশিয়ান, অটোমোবাইল মেকানিক, কনস্ট্রাকশন, সিকিউরিটি গার্ড, ফুড ডেলিভারি, স্টোরকিপার ইত্যাদি কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। জাপানে এসব কাজের বেতনও তুলনামূলক বেশি।

বাংলাদেশ থেকে জাপান যেতে কত টাকা লাগে?

সরকারিভাবে জাপানে যেতে প্রি-ডিপার্চার ট্রেনিংয়ে কোনো ফি দিতে হয় না। এক্ষেত্রে ট্রেনিং এর সময় আবেদনকারীকে শুধু খাবারের খরচ বহন করতে হয়। টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের অভিবাসন ব্যয় লাগে না।

প্রয়োজন হয় শুধুমাত্র পাসপোর্ট তৈরি, মেডিকেল রিপোর্ট ফি, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের খরচ। পাশাপাশি জাপানি ভাষা শিক্ষা কোর্স করতে ২০,০০০ টাকার মতো খরচ হতে পারে। সকল খরচ মিলিয়ে সরকারিভাবে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে জাপানে যেতে ৫০,০০০ থেকে সর্বোচ্চ ১,০০,০০০ টাকা লাগে।

তবে সরকারি পদ্ধতি ছাড়া ভিন্নভাবে জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে ৮-১২ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। সাধারণত প্রাথমিকভাবে জাপানি কোম্পানিগুলোতে পাঁচ বছরের জন্য কর্মী নিয়োগ দেওয়া। পরবর্তীতে কর্মক্ষেত্র নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রকাশ করতে পারলে ভিসার মেয়াদ ও চাকরির বয়স রিনিউ করতে পারবেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!