বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রশিক্ষক বৈমানিক ফারিয়া লারাকে নিয়ে সিনেমা ‘লারা’ প্রযোজনা করছেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। ২০২২-২৩ অর্থবছরের ‘লারা’ সিনেমার জন্য প্রযোজক হিসেবে ৬০ লাখ টাকা সরকারি অনুদান পান এই অভিনেত্রী। এরই মধ্যে প্রথম কিস্তির টাকা তুলে নির্মাণকাজ শুরু করার প্রস্তুতিও সেরেছেন তিনি।
তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সিনেমাটি নির্মাণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সিনেমাটির সর্বশেষ খবর জানতে চাইলে আক্ষেপ করে জ্যোতিকা জ্যোতি দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা দায়িত্ব নেওয়ার পর তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমাকে ফোন করে জানানো হয় আবারও সিনেমাটির স্ক্রিপ্ট জমা দিতে হবে। তিনটি পর্যায়ে প্রাথমিক এবং চূড়ান্ত বাছাইয়ে অনুদান পেয়ে প্রথম কিস্তির টাকাও পেয়েছি। শুটিংয়ের পরিকল্পনাও শেষ। তবুও নতুন করে স্ক্রিপ্ট জমা দিতে হয়েছে। আট মাস আগে জমা দিয়েছি কিন্তু আজও খবর নেই। সিনেমাটি নির্মাণকাজ শুরু করব নাকি বাতিল কিছুই জানানো হচ্ছে না। তাদের পথচেয়ে আছি।’
যোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘শুনেছি, ২০২২-২৩ অর্থবছরের আরও কয়েকটি স্ক্রিপ্ট পুনরায় নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমাগুলোর স্ক্রিপ্ট নেওয়া হয়েছে। তবে আমার সিনেমা তো মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নয়, একজন বৈমানিকের গল্প। সত্যি ঘটনা অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মিত হবে। আমি এরই মধ্যে নির্মাণকাজ শুরুর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সিনেমাটি যেহেতু বড় বাজেটের সে জন্য সহ-প্রযোজক দরকার ছিল। দুজন প্রযোজকের সঙ্গে অনেকদূর কথা এগিয়ে ছিল কিন্তু, এই প্রেক্ষাপটে তারা পিছিয়ে গেছে। অলিখিতভাবে শুনেছি, মন্ত্রণালয় থেকে কিছুই আপাতত বলবে না। এভাবেই ঝুঁলে থাকবে।’
জ্যোতি বলেন, ‘রাষ্ট্র যখন সিনেমা নির্মাণের অনুমতি দেয় সেটা বাতিল করা যায় কিনা প্রশ্ন রইল। কিন্তু সিনেমাটি নিয়ে মানসিক চাপে আছি। প্রত্যেকটা জিনিসের একটা সময় থাকে। যে উৎসাহ নিয়ে কাজটি এগিয়েছিলাম এখন সেটা নেই। মন্ত্রণালয় কিছুই জানাচ্ছে না। এই পরিস্থিতির মধ্যে এখন আছি।’
জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবে সাধারণ শাখায় রোকেয়া প্রাচী ‘রেনুর মুক্তিযুদ্ধ’ সিনেমার জন্য অনুদান পান। অন্যদিকে, শিশুতোষ শাখায় ‘মাটির রাজ কুমার’ অনুদান পেয়েছে। এর প্রযোজক অভিনেত্রী শামীমা ইসলাম তুষ্টি। তাদের স্ক্রিপ্ট নতুন করে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে চাওয়া হয়েছে। তবে এ নিয়ে এই দুই অভিনেত্রীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, মেয়েকে নিয়ে ২০০৬ সালে ‘লারা’ নামে একটি উপন্যাস লিখেছেন সেলিনা হোসেন। সিনেমা ‘লারা’ বানানোর জন্য এরই মধ্যে সেলিনা হোসেনের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিয়েছেন জ্যোতিকা জ্যোতি। এটি পরিচালনা করবেন শেখর দাশ।
আপনার মতামত লিখুন :