মহেশখালী দ্বীপে চলতি মৌসুমে মিষ্টি পানের বাম্পার ফলন হলেও দাম পড়ে যাওয়ায় ব্যাপক হতাশায় পড়েছেন পানচাষিরা। দ্বীপটির ২৭ হাজার চাষি বর্তমানে লোকসানে রয়েছেন, ফলে চাষ করা ধরে রাখা নিয়েই চিন্তিত তারা।
পানের দাম এখন প্রতি বিড়া (৮০টি) ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে দুই সপ্তাহ আগেও একই মানের পান ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
বর্তমানে কৃষিপণ্য, শ্রমিকসহ সবকিছুর মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে পান বিক্রির টাকা নিয়ে সংসার, পানের বরজের খরচ সামলানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে সহজ শর্তে ও অতিরিক্ত মুনাফাবিহীন ঋণের দাবি করেছে চাষিরা।
হোয়ানক রাজুয়ারঘোনা এলাকার পান চাষি আব্দুর রাজ্জাক জানান, দুই সপ্তাহ আগে প্রতি বিড়া ( ৮০টি) পান ৪-৫শ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। বর্তমানে সেই মানের পান বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। স্থানীয় পান চাষিরা জানান, তিন বছর ধরেই পানের দরপতনের দিকে। মাঝেমধ্যে দাম বাড়লেও তা এক মাসের বেশি স্থায়ী হয় না। ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন জানান, পানের মূল্য কম হওয়ায় আমরা হতাশ, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। সংসার চালাতেও কষ্ট হচ্ছে।
বড় মহেশখালীর মুন্সিরডেইল গ্রামের পান চাষি আব্দুল গফুর বলেন, ১০ শতক জমিতে পানের বরজ করেছি। পানের চারা কেনা, নির্মাণসামগ্রী, শ্রমিকের মজুরিসহ সব মিলিয়ে ২ লাখ টাকা খরচ করেছি। পান সংগ্রহের ভরা মৌসুমে পানের দর পতনের কারণে পুঁজি ওঠানো কষ্টসাধ্য হবে।
মহেশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, মহেশখালীতে প্রায় ২৭ হাজার পান চাষি রয়েছে। ৪ হাজার একর জমিতে ছোট-বড় প্রায় ১৩ হাজার বরজে পান চাষ হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে (২০২৪–২৫) বরজগুলোতে প্রতি হেক্টরে ২০ টন মিষ্টি পান উৎপাদিত হয়েছে। কিন্তু পানের দরপতনে চাষিরা বেশি লাভবান হতে পারছে না। লোকসানে থাকায় চাষিরা পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছে।
সরকার কর্তৃক সহজ শর্তে ও বিনা সুদে ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করলে তারা সহজে স্বাবলম্বী হতে পারবে, এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের অন্যান্য এলাকায় উৎপাদিত পানের চাইতে মহেশখালীতে উৎপাদিত মিষ্টি পানের আলাদা কদর রয়েছে। এই মিষ্টি পান সৌদি আরব, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :