ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫

অনিবার্চিত সরকারের কারণে দেশ পিছিয়ে যাচ্ছে : আমীর খসরু

রেজাউল করিম, রংপুর
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ১১:৫৬ পিএম

রাজনৈতিক গণতন্ত্রের সঙ্গে ব্যাবসায়িক গণতন্ত্রায়ণ নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ ছাড়া দল ও বিশেষ ব্যক্তিকে সুবিধা দিয়ে সত্যিকারের পরিবর্তন আসবে না, তাই দ্রুত নির্বাচনের দাবিও তোলেন তিনি। তিনি বলেন, অনিবার্চিত সরকারের কারণে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি, দেশ পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই এই মুহূর্তে দেশে দরকার গণতান্ত্রিক সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর চেম্বার ভবনের হলরুমে আয়োজিত ‘রংপুর বিভাগের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নের রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


এ সময় বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাজনীতি ও অর্থনীতি পাশাপাশি চলবে জানিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, অর্থনীতি থাকবে সবার জন্য মুক্ত। বক্তৃতাকালে রংপুর অঞ্চল থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের চিত্র তুলে ধরে এই অঞ্চলে শিল্পায়নের গুরুত্ব এবং কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের প্রসঙ্গ টানেন তিনি। রংপুরে ইন্টারনেট-ভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির আশ্বাস দিয়ে আমির খসরু বলেন, রংপুরের মানুষকে কাজের জন্য আর বাইরে যেতে হবে না। আগামী দিনে রংপুরে দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। আগামী দিনে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টিতে উদ্যোক্তাদের আবেদন পুরোপুরি অনলাইননির্ভর হবে বলেও জানান আমীর খসরু। এ সময় ক্ষমতায় গেলে ১৮ মাসে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা।
বর্তমান শাসকগোষ্ঠী দেশের জনগণ ও ব্যবসায়ীদের জন্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে প্রশাসন ও অর্থনীতিকে জিম্মি করে রেখেছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী। এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’


আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকারের কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাচ্ছে, অর্থনীতির গতি থমকে গেছে। এর অবসান ঘটাতে হলে দ্রুত একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য।’ স্বৈরাচার পলায়নের পর ‘নতুন প্রত্যাশা’ সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী হাসিনার পলায়নের পর মানুষের মনে বড় পরিবর্তন এসেছে।
এখন আর প্রতিশ্রুতির বন্যা মানুষ গ্রহণ করে না। জনগণ বাস্তবায়ন চায়, অংশগ্রহণ চায়, ফল চায়। বিএনপি সেই বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিয়ে আগামী দিনের পরিকল্পনা নিচ্ছে, যাতে অর্থনীতি ও রাজনীতি পরস্পর সহযোগী হয়ে ওঠে।’


বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আগামীতে কোনো বিশেষ গোষ্ঠী আর দেশের অর্থনীতি কুক্ষিগত করতে পারবে না। প্রত্যেক নাগরিক যেন অর্থনৈতিক কর্মকা-ে অংশ নিতে পারেন, সেই সুযোগ তৈরি করব আমরা। উত্তরাঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তি খাত ঘিরে লাখো তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভবÑ এটি বিএনপির অগ্রাধিকার।’


সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এমদাদুল হোসেন, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্যসচিব আনিসুর রহমান লাকু, বিভাগের আট জেলার চেম্বার নেতৃবৃন্দ এবং জেলা-উপজেলার বিএনপি নেতারা। উপস্থিত ছিলেন উইমেন চেম্বার অব কমার্সের নেতারাও।