ঢাকা রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫

শুরুতেই প্রশ্নবিদ্ধ ৪৫ লাখের ড্রেন

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২৫, ১১:১৮ পিএম

রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভায় ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন আরসিসি ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগের ভিত্তিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তিন দিনের মধ্যে ত্রুটি সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।

প্রকল্পের আওতায় ড্রেনের রডের দূরত্ব, সলিং লেভেল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গরমিল ধরা পড়েছে।

‘স্থানীয় সরকার কোভিড-১৯ রেসপন্স ও রিকভারি প্রকল্প’-এর আওতায় নওহাটা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোলাবাড়ি সড়কে ২২৫ মিটার দীর্ঘ আরসিসি ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণ করছে মেসার্স শাপলা ট্রেডার্স। প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্সে কাজটি বাস্তবায়ন করছেন শামীম আহমেদ ও সুমন আলী নামের দুই ঠিকাদার।

গত ২৭ জুলাই নওহাটা পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ হঠাৎ করে নির্মাণস্থল পরিদর্শন করে। নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সহকারী প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে দেখা যায়, কাজের বেশকিছু জায়গায় নকশা লঙ্ঘন করা হয়েছে।

পরিদর্শন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ড্রেনের ভার্টিক্যাল ও বেস রড যেখানে ১৫০ মিলিমিটার দূরত্বে বসানোর কথা ছিল, বাস্তবে তা ২০০ মিলিমিটার দূরত্বে বসানো হয়েছে। সলিংয়ের জন্য দেওয়া বালু সঠিক লেভেল অনুযায়ী স্থাপন হয়নি। ফলে পানিপ্রবাহে বিঘœ ঘটার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। খনন করা মাটি রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছে, যা পথচারীদের চলাচলে সমস্যা ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়েছে। এই ত্রুটিগুলো তিন দিনের মধ্যে সংশোধনের জন্য ২৮ জুলাই ঠিকাদারকে সতর্ক করে চিঠি দেয় পৌরসভা।

চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ঠিকাদার শামীম আহমেদ। তিনি বলেন, ‘কোনো ত্রুটি থাকলে মৌখিকভাবে জানানো যেত। হঠাৎ চিঠি পাঠানো ঠিক হয়নি। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে হচ্ছে।’

ড্রেন নির্মাণের শুরু থেকেই কাজের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তার পাশে মাটি ফেলে রাখার ফলে দোকানপাটে ক্রেতা কমে গেছে বলে অভিযোগ করেন এক দোকানদার। স্থানীয়রা বলেন, ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় শিশু ও বয়স্কদের চলাফেরা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’

নওহাটা পৌরসভার প্রশাসক ও পবা উপজেলার ইউএনও আরাফাত আমান আজিজ বলেন, ‘জনগণের টাকার অপব্যবহার বরদাশত করা হবে না। কাজ ঠিকমতো না হলে একটি টাকাও বিল দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে কার্যাদেশ বাতিল ও ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।’

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী জানান, ‘সরকারি প্রকল্পে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না। কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করতেই চিঠি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে গাফিলতির প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’