সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক না হয়েও সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে এমপিওভুক্ত করানোর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাতক্ষীরা অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজের তিন শিক্ষকের এমপিও বাতিল এবং বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরতের দাবি উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই কলেজের একজন প্রভাষক।
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কলেজের গভর্নিং বর্ডির সভাপতি ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোয়াইব আহমাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে তিনি তদন্তের নামে দীর্ঘ ছয় মাস ধরে হয়রানি করছেন বলে কলেজের একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কলেজের প্রভাষক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া সুলতানা ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক হলেও সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে এমপিও করিয়েছেন। একইভাবে ইসলামের ইতিহাসের প্রভাষক হুমায়ুন কবির এমপিও করিয়েছেন পরিসংখ্যান এবং ভূগোলের প্রভাষক শাহাজান কবির এমপিও করিয়েছেন অর্থনীতি ও বাণিজ্যিক ভূগোলে। অভিযুক্ত সুরাইয়া সুলতানা বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরত না দিয়ে উল্টো বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে কলেজে আধিপাত্য বিস্তারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
এদিকে দীর্ঘ তদন্ত শেষে ওই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের এমপিও বাতিল এবং উত্তোলিত বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরতের জন্য বিগত ২০১৭ সালের ২ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় যশোর শিক্ষা বোর্ডকে চিঠি দেন। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই যশোর শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অমল কুমার বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক পত্রে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ বাস্তবায়ন করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন।
এ ছাড়া তৎকালীন অধ্যক্ষসহ ৪ শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে পিডিআর অ্যাক্ট ১৯১৩-এ মামলা করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অজানা কারণে ৭ বছর অতিবাহিত হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেই নির্দেশ বাস্তবায়ন করেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাদের বেতন-ভাতা ফেরতের কার্যক্রম তো দূরের কথা, এমপিও বাতিলের জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী জানান, উল্লিখিত বিষয়গুলো কলেজে নেই, তাই তিনজন শিক্ষক ১৯ বছর ধরে কোনো পাঠদান না করেই বেতন-ভাতা তুলছেন।
এ বিষয়ে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও ইউএনও সোয়াইব আহমাদ বলেন, কেউ দায়িত্ব নিতে চাইছেন না, তাই সুরাইয়া সুলতানাকে বরখাস্ত করা যাচ্ছে না।
যোগাযোগ করলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অভিযুক্ত সুরাইয়া সুলতানা বলেন, তার সনদ সঠিক। বেতন-ভাতা ফেরতের বিষয়টি ইতিমধ্যে মীমাংসা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।