বর্ষার শুরু থেকে তুলনামূলকভাবে সহনীয় মানের বাতাস বজায় থাকলেও বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ঢাকার বায়ুমানের মান ব্যাপকভাবে অবনতি হয়েছে। ক্ষতিকর কণার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বায়ুমান সংবেদনশীল মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে পৌঁছেছে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের রেকর্ড অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ঢাকার একিউআই স্কোর ১১০ রেকর্ড করা হয়েছে। এটি নির্দেশ করে যে সংবেদনশীল মানুষের জন্য বাতাস অস্বাস্থ্যকর। বুধবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার বায়ুমান ছিল ৯৩, যা ১৫তম স্থানে অবস্থান করেছিল। এখন ঢাকার অবস্থান দূষিত শহরের তালিকায় অষ্টম।
দূষণের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ভিয়েতনামের হ্যানোয়। সেখানে একিউআই স্কোর ১৬৬, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর। শীর্ষ পাঁচ শহরের মধ্যে অন্যগুলো হলো- ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর কিনশাসা (১৫৯), পাকিস্তানের লাহোর (১২৭), ইরানের তেহরান (১২২) এবং উগান্ডার কাম্পালা (১১৯)।
আইকিউএয়ারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে প্রধান দূষণ উৎস হলো অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা। এই দূষণ শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, হৃদরোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করে।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।
২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুযায়ী, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষ মারা যায়। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।