রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে চাঁদা না দেওয়ার অভিযোগে কয়েকটি দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার পর ব্যবসায়ীরা মার্কেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর বহিরাগতদের মাধ্যমে স্থানীয় একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী মার্কেট কমিটি দখল করে নেয়। এরপর পুড়ে যাওয়া নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবৈধভাবে দোকান নির্মাণ করে তা চড়া মূল্যে বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়। সিটি কর্পোরেশন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্নির্মিত দোকান বুঝিয়ে দেয়ার পর তারা নতুন ভবনে ব্যবসা শুরু করেন।
কয়েকদিন ধরেই এই দখলদার কমিটির লোকেরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে চাঁদা দাবি করছিল। বুধবার সকালে চাঁদা না দেওয়ায় কয়েকটি দোকানে তালা লাগানো হয়। এতে মার্কেটের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও ছোটখাট হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পুরো মার্কেট জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি তৈরি হয়।
ব্যবসায়ী আসাদুল্লাহ জানান, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে তিনটি ব্লকে মোট ৪২৭টি দোকান রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০টি দোকান নিয়মিত চালু আছে। তিনি বলেন, “প্রতিদিন প্রতিটি দোকান থেকে ৭০-৮০ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। এখন নতুন করে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ বিলও দাবি করা হচ্ছে। এই চাঁদাবাজির কারণে আমরা ব্যবসা করতে পারছি না। মার্কেটের পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ থমথমে।”
অপর ব্যবসায়ী বেলাল মিয়া জানান, যারা ৫ আগস্টের পর কমিটি দখল করেছে, তাদের মধ্যে অনেকেরই এখানে দোকান নেই। “তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো চাঁদাবাজি করা। আমরা ব্যবসায়ীরা এই অন্যায় ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মার্কেটের সামনে বিক্ষোভে দাঁড়িয়েছি। এর কোনো সঠিক সমাধান না হলে চাঁদাবাজি আরও বৃদ্ধি পাবে,” তিনি বলেন।
মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী ইফতেখার বলেন, “আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে একাধিক টিম পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। সন্ধ্যায় দুই পক্ষকে থানায় ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।”
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে মার্কেটে চাঁদাবাজি ও সহিংসতার ঘটনা আরও বাড়তে পারে। তারা মার্কেটের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার জন্য তৎপরতা ও নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন।