*** ঠান্ডাজনিত রোগে হাসপাতালে তিল ধারণের জায়গা নেই
*** বেডের সংকটে বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছে শিশুরা
*** ৪০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি ২৪০ জন
*** শিশু রোগীর চাপে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে শেরপুরে হঠাৎ শিশুদের মধ্যে ঠান্ডাজনিত ভাইরাস রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সর্দি, কাশি, জ্বর ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুরা বেশি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ফলে শেরপুর সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে রোগীর চাপ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। সীমিত সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে এত রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, শেরপুর সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ৪০টি শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ২৪০ জন শিশু। এ ছাড়া ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোয় বর্তমানে ভর্তি আছে ৬৮০ জন রোগী। ফলে অনেক রোগীকেই মেঝেতে কিংবা বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বারান্দায় পর্যন্ত রোগীর চাপ এত বেশি হাঁটার জায়গাও ফাঁকা নেই।
হাসপাতালের বহির্বিভাগে দেখা যায়, অসুস্থ শিশুদের কোলে নিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন অভিভাবকরা। চরশেরপুর গ্রামের হোসেন আলী জানান, তার ৯ মাসের সন্তানকে ঠান্ডাজনিত জ্বরে চিকিৎসা করাতে গিয়ে টিকিট পেতে ২ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।
অন্যদিকে, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ৪ মাস বয়সি শিশু মরিয়মের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে ৫ দিন ধরে ভর্তি আছে। কিছুটা উন্নতি হলেও চিকিৎসকরা আরও ৩ দিন থাকতে বলেছেন।’
সিনিয়র নার্স মনিকা বেগম বলেন, ‘সীমিত লোকবল নিয়ে আমরা সাধ্যমতো সেবা দিচ্ছি। রোগীর চাপ এত বেশি অনেক সময় বিলম্ব হলে অভিভাবকরা বিরক্ত হন। তারপরও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
শেরপুর সদর হাসপাতালের শিশুবিশেষজ্ঞ কনসালট্যান্ট ডা. কোহিনুর জামান শ্যামলী বলেন, ‘আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশুদের মধ্যে জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২৫০ থেকে ৩৫০ শিশুকে আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। যদিও কাগজে কলমে এটি ২৫০ শয্যার হাসপাতাল, বাস্তবে ১০০ শয্যার জনবল নিয়েই আমাদের কাজ চালাতে হচ্ছে।’ তিনি আরও জানান, শেরপুর ছাড়াও জামালপুরের বকশীগঞ্জ, কুড়িগ্রামের রৌমারী ও ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা থেকে প্রতিদিন শত শত রোগী আসছেন, ফলে চাপ আরও বেড়েছে।
শেরপুর জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিম মিয়া বলেন, ‘আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শিশু ও বয়স্করা জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছেন। ঠান্ডাজনিত রোগ প্রতিরোধে আমরা সতর্ক আছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো শিশুর মৃত্যু হয়নি।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন