ঢাকা সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বাগেরহাটে ডেঙ্গু আতঙ্ক

সৈকত ম-ল, বাগেরহাট
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ০৬:৪২ এএম
বাগেরহাটে ডেঙ্গু আতঙ্ক

বাগেরহাটে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দিন দিন বাড়ায় জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। যদিও সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। এদিকে ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। সেই সঙ্গে ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশার প্রজনন ধ্বংস ও আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।

জানা যায়, জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত পানি জমে থাকায় মশার প্রজনন প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে ড্রেন, খোলা জায়গায় জমে থাকা পানি ও অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। এতে স্থানীয়রা ডেঙ্গু সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

বর্তমানে জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। গত কয়েক দিনে রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে আশঙ্কাজনক কোনো রোগী নেই।

শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ড্রেনেজ সমস্যার কারণে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাদের দাবি, পৌর কর্তৃপক্ষ দ্রুত নিয়মিতভাবে মশা নিধন কার্যক্রম ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করায় ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে।

জাহিদ হাসান পলাশ বলেন, বাগেরহাট পৌরসভায় দুটি স্লুইস গেট রয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ। এখানে পানি আটকে থাকায় মশার প্রজনন বাড়ছে। দ্রুত মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার না করা হলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও নিজেদের বাসা-বাড়ি ও আশপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেওয়া প্রয়োজন।

সিয়াম হাসান সূর্য নামের আরেকজন বলেন, ‘আমাদের ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় প্রতিনিয়ত পানি জমে থাকে। এতে রাস্তাঘাটে চলাচলে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। বর্তমানে জমে থাকা পানিতে মশার প্রজনন বাড়ছে। এ ছাড়া মাঠে পানি জমে থাকায় আমরা খেলাধুলাও করতে পারছি না।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে পৌরসভার কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বাগেরহাট সদর উপজেলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমদ্দার বলেন, ‘আগের তুলনায় গত দুই-তিন দিন ধরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে আমাদের হাসপাতালে ৬ রোগী ভর্তি রয়েছে। তবে আমরা সতর্ক আছি এবং প্রতিটি রোগীকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা রয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত রোগীদের পর্যবেক্ষণ করছেন এবং তাদের দ্রুত সুস্থ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’

বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. আ স মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বাগেরহাটে ডেঙ্গুর তেমন প্রভাব না থাকলেও আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য বিভাগ সম্পূর্ণ প্রস্তুত। সময়মতো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে ডেঙ্গু মোকাবিলা করা সম্ভব। তাই জ্বর হলে অবহেলা না করে কাছাকাছি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা করার জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানান।’