নোয়াখালীর হাতিয়ায় চুরির অভিযোগে সালিশি বৈঠকের জন্য আটক করা জাফর (১৮) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ গতকাল শনিবার সকালে উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে যুবককে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে।
নিহত জাফর হাতিয়া উপজেলার চানন্দি ইউনিয়নের প্রকল্প বাজার এলাকার মো. জাকেরের ছেলে। এ ঘটনায় যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেই সোহেল মাহমুদ চানন্দি ইউনিয়ন পশ্চিম শাখা বিএনপির সভাপতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহে জাফর বিএনপি নেতা সোহেল মাহমুদের বাড়িতে মাসিক চুক্তিতে দিনমজুর হিসেবে কাজ শুরু করে। দুই-তিন দিন কাজ করার পর সে কাউকে না জানিয়ে বাড়িটি থেকে চলে আসে। এ সময় সোহেল মাহমুদ অভিযোগ করেন যে জাফর তাদের ঘরের আলমারির চাবি, মোবাইল চার্জার ও আসবাবপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় হাতিয়ার আলিবাজার এলাকা থেকে সোহেল মাহমুদ জাফরকে ধরে মোটরসাইকেলে করে প্রকল্প এলাকায় নিয়ে যান এবং সেখানে সালিশি বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকে জাফরের বাবা মো. জাকেরকেও ডেকে চুরির বিষয়টি জানানো হয়। একপর্যায়ে তার বাবাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হলেও, জাফরকে প্রকল্প বাজারে আটকে রেখে হুমকি-ধমকি ও নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ।
জাফরের বাবা মো. জাকেরের অভিযোগ, তার ছেলেকে চুরির দায়ে আটক করে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আমার ছেলে যদি অপরাধ করে থাকত, তাকে আমি শাসন করতে পারতাম। তারা আমার ছেলেকে কেন আমার হাতে ছেড়ে দেয়নি? কেন আটকে রেখেছে?’ তিনি এই হত্যাকা-ের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সোহেল মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, ছেলেটি কিছুদিন আগে তাদের বাড়িতে কাজ করত। সে তাদের ঘর থেকে চাবি, মোবাইল চার্জারসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি করে নিয়ে যায়। গতকাল সন্ধ্যায় তাকে আলিবাজার এলাকায় দেখতে পাওয়ায় সেখান থেকে তাকে প্রকল্প বাজার এলাকায় তার বাড়ির সামনে আনা হয়। সেখানে তার বাবাকে ডেকে এনেই তার সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না এবং আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি তার মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারেন।
হাতিয়ার মোর্শেদবাজার তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ মহিউদ্দিন জানিয়েছেন, বিষয়টি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।