রাঙ্গামাটিতে স্ত্রীর দুই পরকীয়া প্রেমের জেরে খুন হয়েছিলেন কৃষক দিদার আলম। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে এখনো দিদার আলমের মরদেহ উদ্ধার করতে পারেনি পিবিআই। পিবিআই সূত্র জানায়, রাঙ্গামাটির চন্দ্রঘোনা থানার পশ্চিম কোদালা গ্রামের দিদার আলমের স্ত্রী কহিনুর আক্তারের (২৭) সাথে তার স্বামীর বন্ধু আব্দুল খালেকের (৩০)-এর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে স্ত্রী কহিনুরকে খালেকের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন দিদার। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কহিনুর ও খালেক মিলে দিদারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এই পরিকল্পনায় যুক্ত হন কহিনুরের অপর হানজালা।
গত ৩১ মে থেকে দিদার নিখোঁজ থাকলে তার বাবা জামির হোসেন চন্দ্রঘোনা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে কহিনুর, খালেকসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে আদালতে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশ, পরে তদন্তভার পিবিআই চট্টগ্রাম জেলাকে হস্তান্তর করে।
পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক রুহুল আমিন তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ৪ অক্টোবর গাজীপুর থেকে আসামি কহিনুর ও খালেককে গ্রেপ্তার করেন। জিজ্ঞাসাবাদে কহিনুর চাঞ্চল্যকর তথ্য দেনÍখালেক ছাড়াও প্রতিবেশী হানজালার (২৬) সঙ্গে তিন বছর ধরে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িত ছিলেন।
খালেকের সাথে পরকিয়ায় ধরা পড়ার পর থেকে স্বামী প্রায় সময় কহিনুরকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। পরে স্বামীর নির্যাতনে ক্ষুব্ধ হয়ে কহিনুর আরেক পরকিয়া প্রেমিক হানজালার পরামর্শে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩০ জুন রাতে দিদারকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন কহিনুর। পরে হানজালা ও তার সহযোগী সেলিম (২৮) লাশটি প্লাস্টিকে মুড়িয়ে পাশের কোদালা খালে ফেলে দেয়। বৃষ্টির স্রোতে লাশ ভেসে যায় বলে পিবিআই জানায়।
গ্রেপ্তারের পরে আদালতে কহিনুর বিস্তারিত স্বীকারোক্তি দেন। তার জবানবন্দির ভিত্তিতে ১১ অক্টোবর হানজালা ও সেলিমকে রাঙ্গুনিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তারা দুজনও আদালতে দিদার হত্যার কথা স্বীকার করেন।
পিবিআই জানায়, আসামিদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রাঙ্গামাটির এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকা-ের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। তবে এখনো নিহতের লাশ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন