বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৫, ০২:১৮ এএম

নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে শিক্ষককে অপহরণ

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৫, ০২:১৮ এএম

নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে  শিক্ষককে অপহরণ

নওগাঁর বদলগাছীতে এক টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষককে অপহরণ ও মারধর করে জোরপূর্বক অবৈধ নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্কুল পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও তার ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলার বামনপাড়া টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের সুপারিনটেনডেন্ট মো. হুমায়ুন রেজা খানকে অপহরণ করে বাসায় নিয়ে তিন কর্মচারীর নিয়োগসংক্রান্ত কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়েছেন একই প্রতিষ্ঠানের সাবেক সভাপতি বশির উদ্দিন ও তার ছেলে বুলেট হোসেনসহ ৮-১০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সুপারিনটেনডেন্ট গত বৃহস্পতিবার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। সেই সঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও ইউএনওকেও বিষয়টি অবগত করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বামনপাড়া টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের সুপারিনটেনডেন্ট হুমায়ুন রেজা খান গত ৯ অক্টোবর দুপুর আড়াইটার দিকে মোটরসাইকেলযোগে নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। উপজেলার সন্ন্যাসতলা এলাকায় পৌঁছামাত্র প্রতিষ্ঠানের সাবেক সভাপতি বশির উদ্দিন এবং তার ছেলে মো. বুলেট হোসেন, চক কামাল এলাকার মো. হাবিব হোসেনসহ আরও ৮ থেকে ১০ জন মিলে তার পথ রোধ করে জোরপূর্বক অটোতে তুলে সদরে সবুজনগড় এলাকার একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বিদ্যালয়ের তিনজন কর্মচারী নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্রে জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ শেষ করে অভিযুক্তরা রেলস্টেশন এলাকায় ভুক্তভোগীকে ছেড়ে দিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী মোস্তফা বলেন, ওই তিনজন মাঝে মাঝে স্কুলে আসত। তারা নিয়োগ পেয়েছে বললেও কোনো দিন নিয়োগপত্র দেখায়নি। এ ছাড়া কখনো হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেননি।

ইংরেজি শিক্ষক আতিকুর রহমান এবং এনামুল হকসহ একাধিক শিক্ষক জানান, তারা মাঝে মাঝে প্রতিষ্ঠানে আসত বলে আমরাও শুনতাম। কিন্তু কখনও নিয়োগপত্র দেখাননি বা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেননি।

ভুক্তভোগী সুপারিনটেনডেন্ট হুমায়ুন রেজা খান বলেন, আমি ২০২২ সালে এই প্রতিষ্ঠানে যোগদান করি। তখন সভাপতি ছিলেন বশির উদ্দিন। যোগদানের পর তার কাছে দাপ্তরিক বিভিন্ন কাগজপত্র চাইলেও তিনি কখনও বুঝিয়ে দেননি। এরপর তিনি একক ক্ষমতা বলে ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানে তিনজন কর্মচারী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। পরে নিয়োগ বোর্ডও গঠন করা হয়। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন কারণে তাদের নিয়োগ দেওয়া যায়নি।

তবে গত ৯ অক্টোবর আমাকে অপহরণ করে নৈশ্যপ্রহরী বাঁধন হোসেন, আয়া পদে ফারজানা ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে জালাল হোসেনের নিয়োগপত্র, যোগদানপত্রসহ এমপিওভুক্ত করতে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তাতে আমাকে মারধর করে স্বাক্ষর করে নেয়। এরপর তারা আমাকে রাত ৭টার দিকে ছেড়ে দেয়। ঘটনাটি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সভাপতি ও সহকর্মীদের জানিয়েছি এবং ওই দিন রাতেই আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

নৈশপ্রহরী পদের বাঁধন হোসেন বলেন, ‘অপহরণের বিষয়ে কিছু জানি না। আমার বেতন হয়নি, এ জন্য সপ্তাহের পাঁচ দিনের মধ্যে একদিন স্কুলে যাই। আর চার দিন অন্য কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। তবে ২০২৪ সালে আমার নিয়োগ হয়েছে।

স্থানীয় পলাশ হোসেনসহ কয়েকজন বলেন, ‘ঘটনাটি শুধু স্কুলের নয়, পুরো শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছ নিয়োগ ব্যবস্থার ওপর বড় প্রশ্ন তুলেছে। শিক্ষাকে বাণিজ্যিক স্বার্থের জালে ফেলা বন্ধ না করলে এমন ঘটনা আরও বাড়বে।’

এ বিষয়ে পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি বশির উদ্দিনের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তার ছেলে বুলেট হোসেন বলেন, অপহরণের ঘটনাটি সত্য নয় বলে সংযোগ কেটে দেয়। এরপর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন কেটে দেয়।

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তদন্ত চলমান আছে। তবে তদন্তে এখন পর্যন্ত যতটুকু জেনেছি, নিয়োগ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে ঝামেলা চলছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকরর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান ছনি বলেন, বিষয়টি শুনেছি। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করেছে। বিস্তারিত পরে জানাতে পারবো। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত জানা যাবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!