*** রাজবাড়ির গোয়ালন্দ
*** গোয়ালন্দে অনুমোদিত দোকানে অনানুমোদিত ক্রেতাদের ভিড়
*** ভোর থেকেই দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে মদ কিনছেন নানা বয়সি ক্রেতারা
*** বেশিরভাগেরই নেই মদ ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো অনুমোদন
*** নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে কিশোর-তরুণসহ বিভিন্ন বয়সি মানুষ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সরকার অনুমোদিত দেশি মদের দোকানে নিত্যপণ্যের মতো অবাধে মদ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন ভোর থেকেই দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে মদ কিনছেন নানা বয়সি ক্রেতারা। অথচ তাদের বেশিরভাগেরই নেই মদ ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো অনুমোদন। মাঝেমধ্যেই র্যাব, পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে মদ বহনকারী ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও রিকশাচালকরা ধরা পড়লেও প্রকৃত ব্যবসায়ী ও পাচারকারীরা রয়ে যাচ্ছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোয়ালন্দ বাজারের আড়ৎপট্টি এলাকায় সরকার অনুমোদিত রণজিৎ সরকার ও শুকুমার সরকারের দেশি মদের দোকানের সাইনবোর্ডে টিটু সরকার নামে একজন ব্যক্তি ও তার ম্যানেজার গোপাল পারমিটবিহীন সাধারণ ক্রেতাদের কাছেও অবাধে মদ বিক্রি করছেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত প্লাস্টিকের বোতল, ডোপ অথবা বস্তায় ভরা পাত্র হাতে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন ক্রেতারা। দৃশ্যটি যেন কোনো নিত্যপণ্যের দোকানের মতো, পারমিট নেই, অনুমোদন নেই, শুধু টাকা আর খালি বোতল দিলেই মিলছে মদ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব মদ কিনে মাদকসেবী এবং যৌনপল্লির পাইকারি-খুচরা বিক্রেতারা দিনের পর দিন বেপরোয়াভাবে ব্যবসা চালাচ্ছে। ফলে এলাকার কিশোর-তরুণসহ বিভিন্ন বয়সি মানুষ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। নেশার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে অনেকেই ছিনতাই, চুরি ও অন্যান্য অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। তা ছাড়া মাতাল অবস্থায় ইজিবাইক, মোটরসাইকেল চালানোর কারণে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে।
দৌলতদিয়া যৌনপল্লি সংলগ্ন এলাকায় প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার লিটার মদ পাচার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাড়িওয়ালা। তিনি জানান, যৌনপল্লিতে প্রতি লিটার মদের দাম এখন ৫০০ টাকা। এ ছাড়া ইনটেক্ট কট মদের বোতল ১৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। অথচ অন্যান্য জেলায় এর দাম ১২০০ টাকার নিচে। তার দাবি, সেখানে ৫০ টিরও বেশি দোকানে অনুমোদন ছাড়াই প্রকাশ্যে মদ বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে দেশি মদের দোকানের ম্যানেজার গোপালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। এবং পরে দেখা করে কথা বলতে চান।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অবৈধভাবে বা পারমিটবিহীন কারো কাছে মদ বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজবাড়ী জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক (ওসি) আবু বক্কার সিদ্দিক বলেন, গোয়ালন্দে ৩০০ জনের মদ সেবনের পারমিট রয়েছে। পারমিটধারী ছাড়া অন্য কারো কাছে মদ বিক্রি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ আইন অমান্য করলে মদের দোকান মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত লাইসেন্সের আড়ালে পরিচালিত এই অবৈধ মদ ব্যবসা বন্ধ না করলে গোয়ালন্দের যুবসমাজ মাদকাসক্ত হয়ে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন