ময়মনসিংহের নান্দাইলে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) না থাকায় দুই বছর ধরে সেটি বন্ধ রয়েছে সৈয়দগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিক। সিএইচসিপি চাকরি নিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার পর নুতন করে কাউকে নিয়োগ না দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চার গ্রামের মানুষ ওই ক্লিনিক থেকে কোনো ধরনের সেবা পাচ্ছেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নান্দাইল উপজেলায় বর্তমানে ৪০টি কমিউিনিটি ক্লিনিক চালু আছে। তার মধ্যে মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের (ইউপির) সৈয়দগাও কমিউনিটি ক্লিনিক একটি। সর্বশেষে ২০২৩ সালে ১ মার্চ আকলিমা বেগম নামে একজন সিএইচসিপি পদে ওই ক্লিনিকে যোগদান করেন। কিন্তু বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে চাকরি হলে একই বসরের অক্টোবর মাসে তিনি সিএইচসিপি চাকরি ছেড়ে শিক্ষক পদে যোগদান করেন। তখন থেকেই ওই ক্লিনিকে সিএইচসিপির পদটি খালি পড়ে আছে। এ কারণে স্থানীয় মানুষ দুই বছর ধরে ওই ক্লিনিক থেকে সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায় ওই ক্লিনিকটি বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ক্লিনিকের ভেতরের আসবাবপত্র ও সরঞ্জম নষ্ট হয়ে। আবার সদর দরজা ও আশপাশে ময়লা-আবর্জনা জমে আছে, দরজার সামনের স্থানে কুকুর-বিড়াল শুয়ে থাকে। সামনে তার ও দড়ি টানিয়ে তাতে কাপড় শোকাতে দেওয়া হয়েছে। ক্লিনিকের সামনে নামফলক না থাকলে বোঝার উপায় নেই যে, এটি ক্লিনিক না বসতবাড়ি।
ক্লিনিকের জমিদাতা মনির উদ্দিন খান মিনু জানান, তার এক মেয়েকে চাকরি দেওয়া হবে শর্তে তিনি ক্লিনিকের জন্য জমি দিয়েছিলেন। কিন্তু চাকরি দেওয়া হয়নি। দূরের মানুষকে এখানে নিয়োগ দেওয়া হয়। ফলে তারা কোনো দিনই নিয়মিত ক্লিনিকে আসে না। আগে নিয়েমিত রোগী আসলেও দুই বছর ধরে ডাক্তার (সিএইচসিপি) আসে না, তাই রোগীও আসে না।
প্রতিবেশী বৃদ্ধ হাফিজ উদ্দিন মীর জানান, ৪ থেকে ৫ গ্রামের মানুষ এখান থেকে চিকিৎসাসেবা পেত। কিন্তু ডাক্তার না আসায় দুই বছর ধরে সেটা বন্ধ রয়েছে। বৃদ্ধা আঙ্গুরা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ডাক্তর আইয়ে না, এর লাইগ্যা উপজেলা হাসপাতাল গিয়া ওষুধ আনন (আনতে) লাগে, এইহানে ডাক্তর দেয় না, তে এইডা বানাইছে কেরে (কেন)!’
সাবেক সিএইচসিপি আকলিমা বেগম জানান, তিনি কর্মরত থাকা অবস্থায় প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ রোগী সেবা নিতেন। সিএইচসিপি না থাকায় এখন রোগী না আসার বিষয়টি তিনি শুনেছেন।
নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা সুলতানা জানান, ওই ক্লিনিকে একজন সিএইচসিপি নিয়োগ দেওয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকবার চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ওই এলাকার স্বার্থে আবারও চিঠি পাঠানো হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন