এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্বে দুর্দান্ত জয়ে সূচনা করেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে এখন লিটন, সাইফ, হৃদয়দের চোখ ফাইনালে। এই জয়ে ফাইনালে খেলার বিশ^াস আরও দৃঢ় হয়েছে বাংলাদেশ দলের। অবশ্য টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার আগেই এই আত্মবিশ^াসটা ছিল তাদের মধ্যে। শিরোপা জয়ের লক্ষ্যের কথা বলেছিলেন অধিনায়ক লিটন কুমার দাস ও জাকের আলী অনিকরা। কিন্তু গ্রুপ পর্ব থেকেই বাংলাদেশের বিদায় নেওয়ার শঙ্কা ছিল। তবে খাদের কিনারা থেকে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ। এবার আবার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন ডালপালা মেলছে তাদের। তবে সামনে দুটি কঠিন ম্যাচ। আগামীকাল ভারত এবং এর পরের দিনই পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এ দুই ম্যাচের আগে লঙ্কানদের হারিয়ে যে আত্মবিশ^াস পেয়েছেন লিটনরা, সেটি কাজে লাগিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যাওয়ার লক্ষ্য থাকবে তাদের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুর্দান্ত এক ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলার পর সাইফ হাসান ফাইনালে খেলার কথাই বলেছেন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক সাইফ হাসান ও তাওহীদ হৃদয়। এই দুজনের পঞ্চাশোর্ধ্ব দুটি ইনিংসই জয়ের ভিত্তিপ্রস্তর গড়ে দেয়। ৪৫ বলে ৬১ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন সাইফ। তার ইনিংসে ২টি চার ও ৪টি ছক্কার মার ছিল। আর হৃদয় ৩৭ বলে খেলেন ৫৮ রানের ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ২টি ছক্কার মার। শামীম পাটোয়ারী ১২ বলে ১৪ রানের অপরাজিত ইনিংসটি বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ফিনিশিংটা টেনে দেয়। ম্যাচ শেষে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পাওয়া সাইফ ব্যাটিং রহস্য উন্মোচন করে বলেন, ‘উইকেট ভালো ছিল। আমি চেষ্টা করেছি টাইমিং মেলানোর। লিটন আমাকে সাহায্য করেছে। আমি শুধু প্রসেসটা ঠিক রেখেছি।’ এবার ভারত ম্যাচের দিকে ফোকাস দিচ্ছে বাংলাদেশ। তবে ভারতের বিপক্ষে শক্ত লড়াই-ই শুধু নয়, এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলার বিশ^াস দলের মধ্যে আছে বলে জানালেন সাইফ।
তিনি বলেন, ‘এখানে আসার আগে থেকেই আমাদের বিশ^াস ছিল যে, আমরা ফাইনাল খেলব। আমরা এক ধাপ এগিয়েছি। এখনো দুটি ম্যাচ বাকি আছে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য পরের (ভারত) ম্যাচ।’ সবাইকে বড় স্বপ্ন দেখার কথা বলেছেন সাইফ। ম্যাচ ধরে ধরে আগানোর লক্ষ্য থাকবে বাংলাদেশের। ব্যাটিং অলরাউন্ডার সাইফ বলেন, ‘অবশ্যই বড় স্বপ্ন দেখা উচিত। তবে আমাদের ধাপে ধাপে এগোতে হবে। আমাদের পরের ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে এবং আমাদের পুরো মনোযোগ এখন সেই ম্যাচেই থাকবে। পরেরটা পরে দেখা যাবে।’ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিং করার পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সাইফ জানালেন, ‘উইকেট পড়ার পর আমাদের পরিকল্পনা ছিল যে, পাল্টা আক্রমণ করব। নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও আমরা টিম মিটিংয়ে বোলারদের নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। লিটন ভাইয়ের সঙ্গে আমার বোঝাপড়াটা খুব ভালো ছিল। উনি বুঝতে পেরেছিলেন যে পরের বলটা কী হতে পারে এবং সেটাই আমাকে বলছিলেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা সফল হয়েছি।’
বাংলাদেশের জন্য সব সময় ত্রাতা হয়ে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান। ডেথ ওভারে বিধ্বংসী বোলিংয়ের জন্য অনন্য এই বাঁহাতি পেসার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচেও মোস্তাফিজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন। এই অভিজ্ঞ পেসারের প্রশংসা করে সাইফ বলেন, ‘ফিজ ভাইয়ের বোলিং তো সব সময়ই অসাধারণ। উনি গত কয়েক মাস ধরেই খুব ভালো ছন্দে আছেন। ম্যাচেও উনি কম রান দিয়েছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট নিয়েছেন। উনি একজন বিশ^মানের বোলার এবং এ ধরনের পরিস্থিতিতে খেলাটা তার জন্য অনেক সহজ।’ এদিকে, এশিয়া কাপে নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না তাওহীদ হৃদয়। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলে স্বরূপে ফিরেছেন এই ব্যাটসম্যান। খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন ২৪ বছর বয়সি এই ক্রিকেটার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হৃদয় লিখেছেন, ‘চেষ্টা সব সময়ই থাকে, তবে ভাগ্য এবং রিজিক হয়তো সব সময় এক রকম থাকে না। বাংলাদেশের জন্য খেলি, নিজের সর্বোচ্চ এবং সর্বশেষটুকু দিয়ে হলেও মাঠে লড়াই করতে তাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আল্লাহপাকের দরবারে শুকরিয়া সব খারাপ এবং ভালোর জন্য।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন