বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও দৃঢ় সংকল্প ও অধ্যবসায় দিয়ে চলতি বছর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার কমলাপাড়া গ্রামের তানিশা। তার সাফল্য অনেকের জন্য এক অনুপ্রেরণা।
তানিশা জন্ম থেকেই বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাকে থামাতে পারেনি। পরিবারের অকুণ্ঠ সমর্থন ও শিক্ষকদের উৎসাহে সে কঠোর পরিশ্রম করে এসেছে। মুখে কথা বলতে না পারলেও তার চোখ-মুখে ছিল এক অদম্য দৃঢ়তা, যা তাকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।
তানিশার বাবা জয়নাল আবেদীন একজন সরকারি প্রকৌশলী, আর মা মাফুজুন নাহার কমলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তারা মেয়ের প্রতি ভালোবাসা ও ধৈর্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
শিশুকাল থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী তানিশা প্রথমে ঘাটাইল শহিদ সালাহ উদ্দিন সেনানিবাসের ‘প্রয়াস’ নামে প্রতিবন্ধী ও অটিজম শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষালাভ করেন। এরপর নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন সালেহা ইউসুফজাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নূরুজ্জামান বলেন, ‘তানিশা অত্যন্ত ভদ্র ও মনোযোগী ছাত্রী। তার এই সাফল্যে আমরা গর্বিত। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আমরা সবাই দোয়া করছি।’
তানিশার মা মাফুজুন নাহার বলেন, ‘মেয়ের এই সাফল্যে আমি খুব খুশি। সে কথা বলতে না পারলেও সবকিছু অনুভব করে এবং সংকেত বুঝে নেয়। আমি চাই, তানিশা যেন ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু অর্জন করতে পারে। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’
তানিশার সাফল্য প্রমাণ করে, প্রতিবন্ধকতা কোনো বাধা নয় যদি থাকে দৃঢ় সংকল্প, সহানুভূতিশীল পরিবার এবং সঠিক শিক্ষার পরিবেশ। তার গল্প অনেক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের জন্য এক শক্তিশালী অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।