বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৫, ০৭:৪৮ পিএম

চুরির অভিযোগে চোখ উপড়ে নিলো ‘গ্রামবাসী’

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৫, ০৭:৪৮ পিএম

চুরির অভিযোগে চোখ উপড়ে নিলো ‘গ্রামবাসী’

ছবি: সংগৃহীত

চুরির অভিযোগে মো. শাজাহান মিন্টিজ (৪০) নামে এক ব্যক্তির চোখ উপড়ে ফেলা ও ডান হাতের দুই আঙুল কেটে নিয়েছে ‘গ্রামবাসী’। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহত শাজাহান ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আরকলমি গ্রামের বাসিন্দা। পরিবারের দাবি, জমিজমার বিরোধের জের ধরে শাহাজাহানকে চোর বানিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। চোখ দুটো ছুড়ি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নষ্ট করে বালু ভরে দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে গ্রামবাসী চুরির অভিযোগে শাজাহানকে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারা গেছে ভেবে পরিত্যক্ত পুকুরপাড়ে ফেলে রাখে। খবর পেয়ে গ্রাম পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে শাজাহানের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে বরিশাল এবং পরে ঢাকায় পাঠানো হয়। শাজাহান বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভুইয়া জানান, গ্রামবাসী শাজাহান মিন্টিজকে পিটুনি দিয়ে দুই চোখ তুলে নেওয়ার কথা শুনেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রথমে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছিল। এখন তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন। তার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আইচা থানায় কোনো মামলা না থাকলেও ভোলার অন্য থানায় একাধিক মামলা আছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, শাজাহানের হাত-পা ভেঙে দুটি চোখ নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। দুটি আঙুল কেটে নেওয়া হয়েছে।

চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা শোভন কুমার বসাক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শাজাহান মিন্টিজের দুই চোখই উপড়ে ফেলা হয়েছে। অর্থাৎ দুটি আইবল তুলে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া ডান হাতের দুটি আঙুল কেটে ফেলা হয়েছে।

শাজাহানের গ্রামের কয়েকজনের দাবি, তার পরিবারের সবাই চুরির সঙ্গে জড়িত। শাজাহান চোরচক্রের সরদার। তার বাবাও চুরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, কয়েক বছর আগে জেলখানায় থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। গ্রামের কয়েকজনের ভাষ্য, স্থানীয় প্রভাবশালী অধ্যক্ষ মাওলানা লোকমানের ছেলে মো. সাকিবের নেতৃত্বে লোকজন শাজাহানকে ধাওয়া দেয়। তাকে পিটিয়ে, কুপিয়ে, চোখ ক্ষতিগ্রস্ত করে।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে মো. সাকিব বলেন, শাজাহান মিন্টিজ পেশাদার চোর ও চোরচক্রের সরদার। গ্রামবাসী তাকে দেখতে পেয়ে ধাওয়া করে ধোলাই দিয়েছে। এর সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

গ্রামের লোকজনের ভাষ্য, সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে একাধিক চুরির ঘটনায় গ্রামবাসী শাজাহানের প্রতি ক্ষুব্ধ। গতকাল রোববার সকালে শাজাহানকে চর আরকলমী গ্রামে দেখতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ধাওয়া করেন। পরে জাহাঙ্গীর ফরাজির বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। ওই গ্রামের বারেক ফরাজীর বাড়ির পুকুরপাড়ে নিয়ে তাকে নির্যাতন করা হয়।

নজরুল নগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রামপুলিশ মো. সোহরাব মৃধা বলেন, তিনি গ্রামবাসীর কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। দেখতে পান, শাজাহান পুকুরপাড়ে মরার মতো পড়ে আছে। তিনি ও তার সঙ্গে থাকা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) মোহাম্মদ ফিরোজ ও দফাদার মো. আনোয়ার হোসেন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

শাজাহানের অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে তার ছোট ভাই মো. শাহিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘রক্ত চলতেছে। পাঁচ ঘণ্টা ধরে অপারেশন থিয়েটারের টেবিলে থাকার পরে আজ দুপুর দেড়টার দিকে বাইর করছে। চোখ-মুখ সমস্ত শরীলে ব্যান্ডেজ। রক্ত সংগ্রহ করে দিতেছি। তার সারা বডি ড্যামেজ হয়ে গেছে। শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কুপিয়ে জখম করছে। ডান হাতের দুইটা আঙুল কেটে নিয়েছে। হাড়গোড় ভেঙে ফেলেছে। চোখ দুটো ছুড়ি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নষ্ট করে বালু ভরে দিছে।’

জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা বলে দাবি করেন শাহিন। তিনি বলেন, তাদের ৬৪ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে লোকমান মাওলানার ছেলে আসিফ, সজিব, নিয়াজ ও শরীফ মেম্বার এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তার বাবাকেও জমির জন্য চোরের অপবাদ নিয়ে পিটিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার বাবা জেলে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন।
 

আরবি/এসএমএ

Link copied!