দিন দিন বেড়েই চলেছে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার মিঠা পানির শুঁটকি মাছের কদর। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হাওয়ায় জেলাসহ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মিঠা পানির এ শুঁটকি মাছ।
জানা গেছে, জেলার খাল-বিল, পুকুরসহ বিভিন্ন জলাশয় থেকে ১২ মাসই বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উৎপাদন হয়। এসব মাছের মধ্যে লোনাপানির বাগদা ও গলদা চিংড়ি ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়।
এ ছাড়া মিঠাপানির মাছ উৎপাদন হয় বছরে দেড় লক্ষাধিক টন, যার ৮০ শতাংশই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, নীলফামারী, পঞ্চগড়, গোপালগঞ্জ, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও রপ্তানি হয় চ্যাপা শুঁটকিসহ মিঠা পানির বিভিন্ন প্রজাতির মাছের শুঁটকি। শীতের শুরুতেই শুঁটকি তৈরির মৌসুম শুরু হওয়ায় বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। ২০১৭ সালে সাতক্ষীরা শহরের উপকণ্ঠে বেতনা নদীর তীরে শুঁটকি কারখানা গড়ে তোলেন জনৈক প্রশান্ত বিশ্বাস।
তিনি জানান, প্রতিদিন নদী থেকে পুঁটি মাছ সংগ্রহ করার পর তা বিশেষ প্রক্রিয়ায় শুঁটকি করা হয়। শুঁটকিপল্লি ঘিরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে অনেকের। শুঁটকি উৎপাদন বাড়াতে জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাসও দেওয়া হচ্ছে। সাতক্ষীরার মিঠা পানি শুটকি সারা দেশে সুনাম অর্জন করেছে। বর্তমানে শুঁটকি মাছ বড় বড় আড়তদারদের মাধ্যমে ভারতেও রপ্তানি হচ্ছে।
এরপর বাছাই করে তা নীলফামারী, রংপুর ও চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হয়। প্রতি কেজি শুঁটকি ২৭০-৩০০ টাকায় বিক্রি করেন। বছরে ৪০০-৫০০ মণ শুঁটকি উৎপাদন করেন তিনি। জেলার বল্লী গ্রামের সাধন কুমার পুঁটি মাছের পাশাপাশি সিলভার কার্প, মৃগেল ও তেলাপিয়া মাছ শুঁটকি করে বিক্রি করেন। প্রতি বছর ৩৫০-৪০০ মণ শুঁটকি উৎপাদন করেন তিনি। এরপর এসব শুঁটকি চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন।
প্রতি মৌসুমে সাতক্ষীরা থেকে ৪০০-৫০০ টন শুঁটকি সংগ্রহ করেন। এরপর তা ভারতে রপ্তানি করেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাতক্ষীরায় বিপুল পরিমাণ মিঠাপানির মাছ উৎপাদন হয়। ভরা মৌসুমে অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এসব মাছের দাম থাকে তুলনামূলক কম। বছরের এ সময় এসব মাছ যদি শুঁটকি করে বাজারজাত করা হয়, তাহলে লাভবান হতে পারবেন অনেকে।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিএম সেলিম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘মাছ চাষে সমৃদ্ধ জেলা সাতক্ষীরা। রপ্তানিজাত বাগদা ও গলদার পাশাপাশি বছরে বিপুল পরিমাণ মিঠাপানির মাছ উৎপাদন হচ্ছে এখানে। কিছু ব্যবসায়ী বিচ্ছিন্নভাবে পুঁটিসহ মিঠাপানির মাছ শুঁটকি করে ভারতে রপ্তানি করছেন। ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল-মে পর্যন্ত বাজারে প্রচুর পরিমাণে মিঠাপানির মাছ পাওয়া যায়, যা বছরের অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক সাশ্রয় দামে বিক্রি হয়।
ওই সময় এসব মাছ শুঁটকি করে বিক্রি করতে পারলে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। শুঁটকি উৎপাদনে এগিয়ে আসতে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে তাদের সরকারিভাবে সহযোগিতাও করা হবে। বর্তমানে সাতক্ষীরাসহ দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাময় মিঠা পানির মাছের এ শুঁটকি মাছ।

 
                             
                                    


 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                    -20251031233315.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031164732.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন