ব্রহ্মপুত্র নদের ধু-ধু বালু চরে দূর থেকে দেখে মনে হবে সাদা কোন ফুলের বাগান। কিন্তু কাছে গেলেই দেখা যাবে সেটি ফুলের বাগান নয়, কলি থেকে বের হয়ে আছে তুলা বা কৃষকের ভাষার সাদা সোনা। সে তুলা সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে ময়মনসিংহের কৃষক-কৃষাণীরা। এবার তুলা চাষে বাম্পার ফলনে খুশী চাষীরা।
জেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ময়মনসিংহ অঞ্চলে ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল জেলায় তুলা চাষ করা হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ মৌসুমে তুলা উন্নয়ন বোর্ড ময়মনসিংহ অঞ্চলে ২ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে তিন হাজার ৭২৫ জন কৃষক তুলা চাষ করছে।
এবছর সিবি হাইব্রিড-১, সিবি-১২, সিবি-১৩ -১৪সহ বিদেশি সুপ্রিম সিট হোয়াটগোল্ড-১, ২ ও রূপালি-১, ইস্পাহানি কোম্পানির শুভ্র-৩, লাল তীর কোম্পানির ডিএম-৪ জাতের তুলা চাষ করা হয়েছে।
প্রতি বিঘা জমিতে তুলা উৎপাদন হয় ১৫ থেকে ১৬ মণ। প্রতিমণ তুলার মূল্য ৪ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে চাষাবাদের খরচ পরেও ৪৫ হাজার টাকা মুনাফা পাচ্ছেন কৃষকরা।
ময়মনসিংহ অঞ্চলের গফরগাঁও উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলে ঘুরে দেখা যায়, তুলা চাষীরা গাছ থেকে তুলা সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে। তুলা গাছ থেকে তুলা সংগ্রহের পর তা বস্তায় করে সরাসরি চলে যাবে কারখানায়। এ তুলা দিয়ে তৈরী হয় সার্জিক্যাল গজ-ব্যান্ডেজ। বীজ থেকে তৈরি হবে ভোজ্যতেল, গরু ছাগলের খাবার এবং এগুলো জ্বালানি উপজাত হিসেবে পাওয়া যায়।
আবার একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে লাল শাক, লাউ শাক বাদামসহ বিভিন্ন শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করেও বাড়তি আয় করছে কৃষকরা।
নিস্ফলা জমিতে তুলা চাষ করায় একদিকে যেমন জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে কৃষকরা টাকাও পাচ্ছেন। তাদের পরিবারে আসছে স্বচ্ছলতা। তবে তুলা উত্তোলনে শ্রমিক সংকট থাকায় মেশিনের দাবি জানিয়েছে চাষীরা।
প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ তুলা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তুলা এ দেশে উৎপাদন করতে পারলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব। জলবায়ুসহনশীল তুলা চাষে বেশি লাভ পাওয়ায় ময়মনসিংহে বড় ও মাঝারি শ্রেণীর কৃষকরা তুলা চাষে ঝুঁকছে।
চরআলগী ইউনিয়নের তুলা চাষী আনিসুর রহমান বলেন, তুলা একটি লাভবাবন ফসল। এই বার তুলার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে শ্রমিকের সংকট রয়েছে। আগামীতে আর ও বেশী পরিমাণ জমিতে তুলা চাষাবাদ করবো।
একই ইউনিয়নের জয়ার চরের জালাল উদ্দিন বলেন, সরকারি সহায়তায় গত ৪ বছর ধরে তুলা চাষ করেছি। এ বছর তুলার ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তুলা চাষ করে আমি মোটামুটি লাভবান। গাছ থেকে তুলা উঠানোর শ্রমিক সংকট রয়েছে।
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের মাইজহাটি কটন ইউনিট কর্মকর্তা সরকার নাজমুল ইসলাম বলেন, চরাচঞ্চলের কৃষকদের উন্নয়নের জন্য প্রদর্শনী ও প্রণোদনা দেওয়া হবে।। প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হয়। এবং সাধারণ চাষীদের জন্য বিভাগীয় লোনের ব্যবস্থা আছে। আমাার এরিয়াতে ৬৯ একর জমিতে তুলা চাষাবাদ হয়েছে।এই বার খুব ভালো ফলন হয়েছে।
ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা খালেদা ইয়াসমিন জানান, এই বছর ২ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে ৩ হাজার ৭২৫ জন কৃষক তুলা চাষ করছে। এবার তুলার ফলন ভালো হয়েছে। এ মৌসুমে তুলাচাষীদের সরকারি প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। প্রণোদনা প্রদানের ফলে চাষীদের মধ্যে তুলা চাষে আগ্রহ বেড়েছে। আগামী বছরে এ অঞ্চলে তুলার ফলন দ্বিগুন হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছি।

 
                             
                                    

 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                    -20251031233315.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031164732.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন