বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৫, ০১:০৬ পিএম

অধ্যক্ষ সাত্তারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ শিক্ষক-কর্মচারীদের

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৫, ০১:০৬ পিএম

অধ্যক্ষ সাত্তারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ শিক্ষক-কর্মচারীদের

কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অসদাচরণের অভিযোগে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের পর এবার সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল এ) ও সভাপতি, কপিলমুনি জাফর আউলিয়া মাদ্রাসা বরাবর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার এর বিতর্কিত নিয়োগ পদ্ধতির মাধ্যমে মাদ্রাসায় কর্মরত। আব্দুস সাত্তার অত্র মাদ্রাসায় ইফতেদায়ী ক্বারী হিসেবে চাকরিরত অবস্থায় ১৯৮৯ সালে আলিম, ১৯৯১ সালে ফাজিল এবং ১৯৯৩ সালে নিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে কামিল পাস করেন।

পরবর্তীতে ১৫/১/১৯৯৪ সালে এই প্রতিষ্ঠানে আরবি প্রভাষক পদে যোগদান করেন। এর মাত্র ছয় মাস পরে লাউড়ি রামনগর কামিল মাদ্রাসায় ১/৭/১৯৯৪ তারিখে প্রভাষক পদে যোগদান করেন এবং ১৬/১১/১৯৯৭ তারিখে অব্যাহতি নেন। এরপর ১/৩/১৯৯৯ অর্থাৎ ১৬ মাস পরে আবারো কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় আরবি প্রভাষক পদে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ৮/৭/২০১৩ সালে এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ হিসাবে বিতর্কিত নিয়োগ পদ্ধতির মধ্য দিয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। যা ২৪ অক্টোবর এর নীতিমালা অনুযায়ী (৬ মাস অতিবাহিত হলে ব্রেক অফ সার্ভিস হবে) ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা পূর্ণ না হওয়ায় অনৈতিক সুবিধা দিয়ে নীতিমালা লঙ্ঘন করে অধ্যক্ষ  পদে নিয়োগ লাভ করেন।

অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর থেকে আব্দুস সাত্তার অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অসদাচরণ ও নারী কেলেঙ্কারির সাথে নিজেকে জড়িয়ে বিতর্কিত ও সমালোচিত হন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত মাদ্রাসার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের নামে ২৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মাদ্রাসার অফিস সহকারীর নিকট সংরক্ষিত খাতাপত্র অডিট করে পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ রয়েছে।

বিষয়টি তৎকালীন সভাপতি ও এডিসি রাজস্ব খুলনা, মুকুল কুমার মৈত্র, অধ্যক্ষের দাখিলকৃত মাদ্রাসা উন্নয়নের নামে ৪০ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯০৯ টাকা ঋণ দেখিয়ে রেজুলেশন প্রস্তুত করলে সভাপতি উক্ত রেজুলেশন এর হিসাব সংক্রান্ত অংশ কেটে দেন এবং আভ্যন্তরীণ অডিট প্রতিবেদন জমা প্রদানের নির্দেশ দেন।

এছাড়া অধ্যক্ষ সরকার প্রদত্ত পিবি জিএসআই অনুদানের ৫ লাখ টাকা গভর্নিংবডি বা শিক্ষকদের কাউকে কিছু না জানিয়েই নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী খরচের ভাউচার জমা না দেওয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ভাউচার জমা না দেওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে তালিকা প্রকাশ করেছেন তার চতুর্থ তাগিদাপত্রেও অত্র প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে।

জানা গেছে, অত্র মাদ্রাসায় বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীদের কাছ থেকে এমপিওভক্তি, বিএড স্কেল, উচ্চতর স্কেল ও বেতন করানোর নামে বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে হাজার হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছেন অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার।

এনটিআরসিএ থেকে নিয়োগ প্রাপ্ত প্রভাষক ও শিক্ষকদের কাছ থেকে সভাপতি, রেজুলেশন বাবদ এবং বেতন করানোর নামে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও কর্তা ব্যক্তিদের দেওয়ার কথা বলে হাজার হাজার টাকা গ্রহণ করেছেন। এমনকি মাদ্রাসা ক্যাম্পাসের আয়তন বৃদ্ধির জন্য স্বল্পমূল্যে জমি ক্রয়ের সময় দাতাদের ভুল বুঝিয়ে সাড়ে চার শতাংশ জমি নিজের নামে লেখার অভিযোগ রয়েছে এই পত্রে।

পরবর্তীতে এ ব্যাপারে জমিদাতারা আন্দোলনের হুমকি দিলে মাদ্রাসার জমি এক সপ্তাহের মধ্যে মাদ্রাসায় ফেরত দিবেন মর্মে লিখিত শর্তে স্বাক্ষর করেও অদ্যবদি তা ফেরত দেননি। সর্বোপরি অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের সাথে মাদ্রাসার আয়ার গোপন প্রনয়ের বিষয়টিও আবেদনে উঠে এসেছে।

শিক্ষক-কর্মচারী এর মধ্যে মোঃ মুজিবুর রহমান, এম এম জমিরুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী হুসাইন, মোঃ শরিফুল ইসলাম, ফারহানা জাহান, নাজনীন সুলতানা, আব্দুল বাসেত, মোঃ ইউসুফ আলী, মোঃ হাসান আলী, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, কাকলি টিকাদার, হোসনেয়ারা খাতুন, শিউলি রানী, সুরাইয়া খাতুন, মোঃ সরোয়ার খান, আনোয়ার সাদাত, মেহেদী হাসান, মোঃ মারুফ বিল্লাহ, এস কে মিজানুর ও শেখ মাসুদুজ্জামান স্বাক্ষরকৃত এই অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে, অধ্যক্ষ এর অফিস কক্ষে রক্ষিত শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে গেলে  অধ্যক্ষ ও আয়ার আপত্তিকর অবস্থানের কারণে শিক্ষকদেরই বিভিন্ন সময় লজ্জায় পড়তে হয়েছে।

উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, নারী কেলেঙ্কারি, জমি আত্মসাৎ ও মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে অবৈধ ঝাড়-ফুঁক ব্যবসা পরিচালনার প্রতিবাদে ২৩/২/২০২৫ তারিখ জমি দান কারীর পরিবার পরিজন ও স্থানীয় এলাকাবাসী মানববন্ধন করেন।

ইতোপূর্বে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে কপিলমুনি ইউনিয়ন পরিষদের সালিশি বৈঠকে তৎকালীন সময়ে আর্থিক জরিমানা ও তিরস্কারের ঘটনা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার বলেন, একটি মহল তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করেন। কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এল এ খুলনা নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ এর সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। 

আরবি/জেডআর

Link copied!