ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে অর্ধ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি।
গতকাল শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে জেলার হরিপুর উপজেলা গেদুরা ইউনিয়নের আটঘরিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুজ্জামান।
স্থানীয়রা জানান, হরিপুরের গেদুরা ইউনিয়নে চার বিঘা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আটঘরিয়া গ্রামের মাহাতাব গং এর সাথে বেলডাঙ্গী গ্রামের ইয়াসিন, নুরুল গংয়ের বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। জমির মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালত ওই জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করে।
এদিকে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) আদালতের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জমি দখলের জন্য এলাকায় গেলে এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও সংর্ঘষ সৃষ্টি হয়। এ সময় অগ্নিসংযোগ করে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করার ঘটনাও ঘটে। এতে দু’পক্ষের কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। আহতরা ঠাকুরগাঁওয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
পরে পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দিলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় বিকেলে হরিপুর উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
সংবাদ পেয়ে হরিপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দুটি ইউনিট ও রানীশংকৈল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় হরিপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম লিডার জয়নুল আবেদীন বলেন, দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আমরা দুই উপজেলার চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। এতে ১২টি পরিবারের বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে। একেকটি পরিবারের ২-৩টা করে ঘর পুড়ে গেছে। তাতে আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২০ লাখ টাকার মতো এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার ফলে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ টাকা।
হরিপুর থানার ওসি জাকারিয়া মণ্ডল জানান, দীর্ঘদিন ধরেই আটঘরিয়া গ্রামে জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। আদালত এর আগেও ওই জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করে।
তিনি বলেন, আজ জমি দখল করতে গেলে মাহাতাব গং ও ইয়াসিন, নুরুল গংয়ের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুজ্জামান জানান, দুপক্ষ আক্রমণাত্মক অবস্থানে রয়েছে এবং চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণে জানমাল রক্ষা ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে গেদুড়া কিশমত এলাকা ও আটঘরিয়া বাজারে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই আদেশ জারি থাকবে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানাসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

 
                             
                                    

 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                    -20251031233315.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031164732.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন