রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলওয়ে স্টেশনে নেই কোনো জনবল। ট্রেন থামছে প্ল্যাটফর্ম থেকে দ্বিতীয় নম্বর লাইনে। এতে যাত্রীরা পড়ছেন ভোগান্তিতে। কখনো মই কিংবা চেয়ার দিয়ে, আবার কখনো হাতলে ঝুলে ঝুঁকি নিয়ে ওঠানামা করছেন ট্রেনে। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চললেও রেল বিভাগের কোনো মাথাব্যথা নেই।
পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯২৯ সালে স্থাপিত হয় নন্দনগাছী স্টেশন। এটি উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর মৌজায় অবস্থিত। জনবলের অভাবে স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০১৫ সালের শেষের দিকে। এখন সিগন্যাল ছাড়াই এই স্টেশন হয়ে চলাচল করে ট্রেন। আড়ানী ও হলিদাগাছী স্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় সিগন্যাল। আন্তঃনগর ট্রেনগুলো দাঁড়ায় না এই স্টেশনে। মহানন্দা এক্সপ্রেস ও কমিউটার এক্সপ্রেস এই দুটি লোকাল ট্রেন থামে।
ট্রেনের নির্ধারিত সময় বেঁধে দেওয়া থাকলেও যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। মাস্টার বা টিকিট কাউন্টার না থাকায় ট্রেনের ভেতরেই যাত্রীদের টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। এই স্টেশনে দুটি পৃথক রেলক্রসিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও ট্রেনগুলো থামে দ্বিতীয় লাইনে। সেটা প্ল্যাটফর্ম থেকে দূরে। ফলে বয়স্ক যাত্রী হলে মই বা চা-দোকানের চেয়ার পেতে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে ওঠানামা করতে হয়। সাধারণ যাত্রীরা ওঠানামা করেন ট্রেনের হাতলে ঝুলে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাহেলা বেগম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনে যাতায়াত করি। এখন স্টেশনে লোকবল না থাকায় প্ল্যাটফর্মের ১ নম্বর লাইন দিয়ে কোনো ট্রেন চলাচল করে না। যে দুটি ট্রেন থামে তাও ২ নম্বর রেললাইনে দাঁড়ায়। রোগী ও বৃদ্ধ মানুষকে আশপাশের বাড়ি থেকে মই এনে ট্রেনে উঠতে হয়। অনেক যাত্রী ট্রেনে ওঠানামার সময় পড়ে গিয়ে আহতও হন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন চারঘাট উপজেলার সভাপতি মো. কামরুজ্জামান বলেন, স্টেশনটির কার্যক্রম পুনরায় চালু হলে এই অঞ্চলের যাত্রীদের খুব উপকার হবে।
স্থানীয় নিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, এই স্টেশন ঘিরে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি অফিস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চারঘাট ও পার্শ্ববর্তী পুঠিয়া উপজেলার অনেক যাত্রী এই স্টেশন দিয়ে চলাফেরা করত। কিন্তু স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ায় সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছে হাজারো মানুষ। যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে-নামতে কষ্ট হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পার্শ্ববর্তী সরদহ রেল স্টেশনের মাস্টার ফরহাদ হোসেন বলেন, মূলত জনবলের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ নন্দনগাছী স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে নন্দনগাছী স্টেশনে রাজশাহী টু খুলনাগামী মহানন্দা এক্সপ্রেস ও রাজশাহী টু ঈশ্বরদী কমিউটার এক্সপ্রেস এই দুটি ট্রেন প্লাটফর্ম ছাড়া থামে। এ ছাড়া অন্য কোনো ট্রেন থামে না।
এই স্টেশন থেকে ট্রেন ভ্রমণ করতে গেলে টিকিট আনতে হয় ১০ কিলোমিটার দূরের সরদহ অথবা ১২ কিলোমিটার দূরের আড়ানী স্টেশন থেকে বলে তিনি জানান।
ঈশ্বরদী পাকশী রেলওয়ের কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে কথা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, নন্দনগাছী স্টেশনসহ আরও বেশ কয়েকটি স্টেশনের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রয়েছে। কবে এর সমাধান হবে তা জানা নেই।

 
                             
                                    -20250422232435.webp)


 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                    -20251031233315.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031164732.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন