কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রায় দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী গাজীকালু-চম্পাবতী মেলা বসানো নিয়ে জামায়াত ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২০ মে) সন্ধা ৭টার দিকে উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা চাপাইগাছি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। আহতরা কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড়শ বছর ধরে হোগলা চাপাইগাছি বাজারে গাজীকালু-চম্পাবতী মেলার আয়োজন করে আসছেন স্থানীয়রা। ১৭ মে থেকে মেলা শুরু হওয়ার কথা। এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে মেলায় অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়া খেলার অভিযোগ তুলে মেলা বন্ধের দাবি তোলেন জামায়াত ও সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
এদিকে, প্রশাসনের অনুমতি না মিললেও বিএনপির সমর্থকরা মেলা বসানোর চেষ্টা করেন। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিকেল থেকে এলাকায় উভয় দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে সন্ধ্যায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘অন্তত ৩০টি দোকানে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
তবে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জগন্নাথপুর ইউনিয়ন উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মেলায় অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়ার আসর বসানো হয়। সে জন্য প্রশাসন অনুমতি দেননি। তবু বিএনপি ও মেলা কমিটি মেলার আয়োজন করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মেলার বিষয় জানতে গেলে প্রতিপক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছেন। আমিসহ আমাদের অনেকেই আহত হয়েছেন। থানায় মামলা করা হবে।’
বিএনপির সমর্থক ও খোকসা সরকারি কলেজের প্রভাষক সরাফাত সুলতান বলেন, ‘জামায়াতের শতাধিক লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে, মেলার দোকানপাট ভাঙচুর করেছে।’
উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন বলেন, ‘ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জামায়াতের নেতা-কর্মী ও স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে গেলে মেলা কমিটির লোকজন হামলা করেছেন। থানায় মামলা করা হবে।’
মেলার অনুমতি ছিল না বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান শেখ। তিনি বলেন, ‘মেলা বসানো নিয়ে দু‘পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখন এলাকার পরিবেশ শান্ত আছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :