জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর সংঘটিত গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর উইং জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম।
গত বুধবার (২২ মে) রাতে তার নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি এই অভিযোগ করেন।
তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের বিচার বিভাগে যে নিয়োগ ও রদবদল হয়েছে, তা ছিল পুরোপুরি রাজনৈতিক। হাইকোর্ট থেকে শুরু করে অধস্তন আদালত পর্যন্ত বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও বিচারকদের দ্বারা পূর্ণ করা হয়েছে। ফলে গণহত্যার নিরপেক্ষ বিচার এখন প্রশ্নের মুখে।’
তিনি লেখেন, ‘জুলাইয়ের ঘটনাপরবর্তী সময়ে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি), অতিরিক্ত ও সহকারী পিপি, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের বিচারপতি নিয়োগ এবং বিচারকদের বদলি-সবকিছুতেই বিএনপির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল। তখনকার কেয়োটিক পরিস্থিতিতে এসব ঘটনা অনেকের চোখ এড়িয়ে গেছে।’
তারিকুল বলেন, ‘বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানকে নিয়োগ দেওয়া হয় ৭ আগস্ট, তখনো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়নি। তিনি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা। শুধু তিনি নন, পুরো অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে যারা আছেন-অতিরিক্ত, ডেপুটি, সহকারী-তাদের ৯৫% বিএনপিপন্থী। কয়েকজন জামায়াত ও অন্যান্য দলের সমর্থকও আছেন। এটিই এখন সুপ্রিম কোর্টের পুরো কাঠামো নিয়ন্ত্রণ করছে।’
তারিকুল দাবি করেন, ‘হাইকোর্ট বিভাগে নিয়োগপ্রাপ্ত ২৩ জন বিচারকের সবাই বিএনপি নেতাদের প্রত্যক্ষ চাপে নিয়োগ পেয়েছেন। যারা বিএনপি সমর্থক নন, তাদেরও নিয়োগে বিএনপির সম্মতি নেওয়া হয়েছে। এটা আইন অঙ্গনের ওপেন সিক্রেট।’
তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিটি জেলার অধস্তন আদালতে পিপি, এডিশনাল ও সহকারী পিপি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। তারা আদালতে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, অথচ তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জামিন দিয়ে, রাজনৈতিক শেল্টার দিচ্ছেন। এতে বিচারপ্রক্রিয়া চরমভাবে প্রভাবিত হচ্ছে।’
তারিকুল অভিযোগ করেন, ‘অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলির ক্ষমতা এখনো আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে। বিএনপি রাজনৈতিকভাবে এই বদলির প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করেছে। ফলে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা ও দায়রা জজসহ প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ পদে বিএনপির পছন্দমতো নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
তারিকুল ইসলামের ভাষায়, ‘বিচার বিভাগ হলো রাষ্ট্রের ভারসাম্য রক্ষাকারী অঙ্গ। অথচ বিএনপি সেটিকে দলীয়করণ করে ফেলেছে। এমন একচেটিয়া দখলের ফলে জুলাই গণহত্যার বিচার আদৌ সম্ভব হবে কিনা, সেটাই আজ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ ছাত্র ও জনতা আজ প্রশ্ন করছে-এই বিচার বিভাগ নিয়ে বিএনপি যখন নির্বাচন চায়, তখন তারা নিজেরাই কি বিচারকে প্রভাবিত করছে না? এই অবস্থা বিচার বিভাগের ওপর আওয়ামী লীগের হস্তক্ষেপকেও হার মানিয়েছে।’

 
                             
                                    -20250521214543.webp)

 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031183405.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
       -20251031164732.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন