মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ৪নং শ্রীপুর সদর ইউনিয়নে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক বাড়িতে গভীর রাতে সবাইকে অচেতন করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান মালামাল লুটের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। সেই সঙ্গে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে উপজেলার হরিন্দি গ্রামে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ শ্রীপুর উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি হিমাংশু শিখর রায়ের গ্রামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
হিমাংশু শিখরের ছেলে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. হিমাদ্রী শেখর রায় বলেন, ‘তার বাবা হিমাংশু শিখর রায় কয়েকদিন ধরেই শারীরিকভাবে অসুস্থ রয়েছেন। রাতের বেলা সবাই মিলে তার বাবার কাছেই ছিলেন। আর এ কারণেই ওই ঘরের বারান্দার গ্রিল সবসময় খোলা রাখা হয় কিন্তু বাড়ির মূল গেট তালাবদ্ধ ছিল। গত মঙ্গলবার (২৭ মে) রাত অনুমানিক ১২টা পর্যন্ত পরিবারের সদস্যরা জেগে ছিল। রাতের কোনো একসময় সুযোগ বুঝে বাড়ির দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে তারা পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে চেতনানাশক স্প্রে প্রয়োগ করে বাড়ির সব সদস্যকে অচেতন করে ফেলে। অচেতন অবস্থায় দুর্বৃত্তরা সুযোগ বুঝে তাদের ইচ্ছামতো সোনা-দানা, নগদ টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।’
হিমাংশু শিখরের শ্যালক মনোরঞ্জন রায় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার পরে হিমাংশ বাবুর বাড়িতে গিয়ে দেখি বাড়ির সদর গেট ভেতর থেকে আটকানো। কিন্তু কাউকে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। শুধু একটি ঘরের এক পাশের একটি দরজা খোলা ছিল। পরে বাড়ির ভেতরে গিয়ে দেখি, এক ঘরে রায় হিমাংশু শিখর এবং অন্য ঘরে তার ভাই কিশোর কুমার রায় মধু ও মধুর স্ত্রী চন্দনা রায় অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। প্রত্যেকটি রুমের মধ্যে লন্ডভন্ড অবস্থা। রাতের আঁধারে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা বুঝতে পারছি না। দুর্বৃত্তরা টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকারসহ বাড়ির মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। অচেতন অবস্থায় তিনজনকে বুধবার সকালে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন।’
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের আরএমও মামুনুর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বুধবার সকালে অচেতন অবস্থায় একই পরিবারের তিন সদস্যকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
শ্রীপুর থানার ওসি মো. ইদ্রিস আলী গণমাধ্যমকে বলেন, খবর শোনামাত্রই সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। বাড়ির সব সদস্য অচেতন থাকার কারণে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :