বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভারী বর্ষণ ও নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে পাথরঘাটার নাচনাপাড়া ও কাঠালতলী সংযোগ সড়কের একটি অংশ ভেঙে পড়ে। ভেঙে যাওয়া রাস্তার প্রায় ২০ মিটার এলাকা এবং বেড়িবাঁধের ক্ষতির কারণে ওই এলাকার কয়েকটি গ্রাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে রোববার (১ জুন) সকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বরগুনা কন্টিনজেন্টের সদস্যদের উদ্যোগে ভেঙে যাওয়া সড়কের পাশে একটি অস্থায়ী সাঁকো নির্মাণকাজ শুরু করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রভাবে নাচনাপাড়া ইউনিয়নের হলতা নদীর মানিকখালী অংশে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এতে অন্তত ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, চলতি বছরের ৮ আগস্ট সংকট নিরসনের চেষ্টা করতে গিয়ে কিছু মানুষ বেড়িবাঁধের একটি অংশ কেটে ফেলে। পরবর্তীতে স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড বেড়িবাঁধ পুনঃনির্মাণে টেন্ডার আহ্বান করলেও অজ্ঞাত কারণে সেই মেরামতকাজ শেষ না করেই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অসমাপ্ত অংশটি নিম্নচাপের পানির চাপে ফের ভেঙে পড়ে।
এ নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে বহু ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। দুই পাড়ের মানুষের চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তি হচ্ছে। আজ নৌবাহিনীর সহায়তায় সাঁকো নির্মাণ শুরু হয়েছে। এতে কিছুটা হলেও দুর্ভোগ লাঘব হবে। তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’
স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, ‘নৌবাহিনীকে এতদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবেই জানতাম। তারা যে এতটা মানবিক কাজেও যুক্ত হয়, তা জানা ছিল না। দিনভর বৃষ্টির মধ্যে ভিজে পানিতে দাঁড়িয়ে সাঁকোর পিলার বসাতে দেখে চোখ জুড়িয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লে. সৈয়দ মাসরুর সালেকিন মারুফ বলেন, ‘২৯ মে নিম্নচাপের কারণে বেড়িবাঁধসহ প্রায় ২০ মিটার রাস্তা ভেঙে যায়। ফলে পাঁচটি গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী অস্থায়ী সাঁকো নির্মাণে এগিয়ে আসে। জনস্বার্থে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এ ধরনের কার্যক্রম আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।’
আপনার মতামত লিখুন :