শনিবার, ০৭ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২৫, ১১:৩৩ এএম

বাবার দাফন শেষ করেই হাটে আসা আরিফুলের ৩ গরুই বিক্রি

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২৫, ১১:৩৩ এএম

বছিলা হাটে গরুর গলা ধরে দাঁড়িয়ে নবম শ্রেণির ছাত্র আরিফুল।         ছবি- সংগৃহীত

বছিলা হাটে গরুর গলা ধরে দাঁড়িয়ে নবম শ্রেণির ছাত্র আরিফুল। ছবি- সংগৃহীত

বাবার লাশ দাফন শেষ করেই ঢাকার গরুর হাটে ছুটে যেতে হয়েছে নবম শ্রেণির ছাত্র আরিফুল ইসলামকে। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চর পলাশী ফতেপুর গ্রামের এই কিশোর গত সোমবার থেকে রাজধানীর বছিলা পশুর হাটে তিনটি গরু নিয়ে অপেক্ষা করছিল বিক্রির জন্য। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সব গরুই বিক্রি হয়ে গেছে।

আরিফুলের বাবা কোহিনূর শেখ (৫৭) মারা যান গত শনিবার দিবাগত রাতে টাঙ্গাইলে এক সড়ক দুর্ঘটনায়। গরু নিয়ে ট্রাকে করে ঢাকায় আসার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। সে সময় কোহিনূর ছিলেন ট্রাকের পেছনের অংশে, গরুর পাশে।

আরিফুল ছিলেন চালকের পাশে। মাঝরাতে দাঁড়ানো অবস্থায় তাদের ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় একটি সবজিবাহী ট্রাক। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান কোহিনূর।

বাবার মৃত্যুর শোক সামলাতে সময় না দিয়েই আরিফুলকে নামতে হয়েছে জীবিকার লড়াইয়ে। বাবার দাফন সেরে পরদিনই গরু নিয়ে হাজির হয় ঢাকার বছিলা পশুর হাটে। তার সঙ্গে ছিলেন বড় ভগ্নিপতি দুলাল হোসেন। তিন দিন খোলা আকাশের নিচে অপেক্ষার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে শেষ গরুটিও বিক্রি হয় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। বাকি দুটি গরু দুপুরের আগেই বিক্রি হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকায়।

দুলাল হোসেন জানান, বাজার মন্দা হলেও তারা তুলনামূলক ভালো দাম পেয়েছেন। পত্রিকায় খবর দেখে অনেকেই এসে শুধু গরু দেখতে নয়, কিছু আর্থিক সাহায্যও করেছেন।

দুঃখজনক এ ঘটনার পেছনে রয়েছে আরও করুণ এক বাস্তবতা। কোহিনূর শেখের পেশা ছিল মাছ ধরা। তবে পদ্মা নদীতে জমি হারিয়ে বর্গা নিয়ে কৃষিকাজ করতেন। এ বছর সাড়ে চার বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে প্রায় তিন লাখ টাকা লোকসানে পড়েন। সবটাই ঋণ। সেই ঋণ শোধ করতে গরু বিক্রিই ছিল শেষ ভরসা।

কোহিনূর শেখের মেয়ে আমেনা খাতুন জানান, তাদের আগের বসতভিটাও নদীভাঙনে চলে গেছে। এখন যেখানে আছেন, সেখান থেকেও মাত্র কয়েকটা ঘরের পরই পদ্মার খোলা পাড়। আবার নদী ভাঙতে শুরু করলে তাদের আর কোনো আশ্রয় থাকবে না।

ঘরে বসে আছে শোকে পাথর হয়ে যাওয়া কোহিনূরের স্ত্রী হাফেজা বেগম। ছেলে আরিফুলের দিকে তাকিয়ে শুধু বললেন, আমার ব্যাটার এখন কী হইব। সে কিচ্ছু জানে না। সে কি একটা বোঝা নিবার পারব, এই বয়সে আমিই বা কী করমু?

এ দুর্ঘটনা শুধু একটি প্রাণই কেড়ে নেয়নি, পাল্টে দিয়েছে একটি পরিবারের জীবনের পুরো হিসাব। সংসারের দায়িত্ব এখন পড়ে গেছে এক কিশোরের কাঁধে। ঈদ আসছে, কিন্তু আরিফুলের ঘরে নেই কোনো উৎসবের গন্ধ-আছে শুধু বেঁচে থাকার লড়াই।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!