ভোলার চরফ্যাশনে ব্যবসায়ীর দোকান ঘর জবর দখল করে তিন দফায় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা চাঁদা হাতিয়ে নিয়েছেন এক কৃষকদল নেতা। এরপর ফের আরও ১ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে ব্যবসায়ীর দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নুরাবাদ ইউনিনের কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক নুরে আলমের বিরুদ্ধে।
আজ সকালে ওই ব্যবসায়ীকে অবরুদ্ধ করে তার দাবিকৃত এক লাখ টাকা দাবি করেন। ব্যবসায়ী চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তার ওপরে হামলা চালিয়ে মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়রা জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে দুলারহাট থানা পুলিশ ওই ব্যাবসায়ীকে উদ্ধার করেন। পরে স্বজনরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে দুলারহাট থানার নুরাবাদ ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডে চর তোফাজ্জল গ্রামের নাইবের মসজিদ সংলগ্ন চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর তিনি বিকালে বাদী হয়ে কৃষকদল নেতা নুরে আলম ও তার ভাই মো. কালুসহ দুইজনকে আসামি করে দুলারহাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বৃদ্ধ ব্যবসায়ী শাহে আলম তালুকদার জানান, কৃষকদল নেতা নুরে আলম ২০১৫ সালে তার বসত বাড়ির সামনে সড়কের ঢাল দখল করেন নেন। ওই সময় স্থানীয় গন্যমান্যদের সমোঝতায় স্টাম্পে লিখিত করে তাকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দোকান ভিটি থেকে উচ্ছেদ করা হয়।
এর পরে তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় চলেন যান। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি দেশে ফিরে এসে ফের তার আরও একটি দোকান ঘর তার দাবি করেন। ওই দোকান ভিটে তার মালিকানা দাবি করে এক লক্ষ টাকা চাঁদাদাবি করে আসছিলেন।

পরে তিনি নিরুপায় হয়ে উপজেলা বিএনপির এক নেতার দ্বারস্থ হলে ওই নেতার মধ্যস্থতায় তাকে প্রথম দফায় ৬০ হাজার টাকা ও দ্বিতীয় দফায় ৮৫ হাজার দিয়ে ফের ওই দোকান ঘরের দখল পজিশন নিয়ে তিনি আধাপাকা দোকান ঘর নির্মাণ করে ভোগ দখলে আছেন।
তিনি আরও জানান, এতেই থেমে জাননি ওই কৃষকদল নেতা। তিন দফায় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নিয়েও ফের তার নিজ মালিকানা একটি দোকান ঘর কৃষকদল নেতার মালিকানা দাবি করে তালা ঝুলিয়ে দেন। এবং এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ ঘটনায় তিনি স্থানীয় দুলারহাট থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেও কোনো সুরাহ মেলেনি।
পরে কৃষকদল নেতা নুরে আলম তার দাবিকৃত টাকার জন্য তাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার তিনি নিজ বাড়ি থেকে স্থানীয় দুলারহাট বাজারে যাওয়ার পথে কৃষকদল নেতা নুরে আলমসহ তার দল-বল তার পথরোধ করে তাকে অবরুদ্ধ করে তাদের দাবিকৃত ১ লাখ টাকা দাবি করেন।
তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলে তার ওপর অর্তকিত হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে স্থানীয়রা জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে দুলারহাট থানা পুলিশ তাকে কৃষকদল নেতার বন্ধিশালা থেকে মুক্ত করেন।
এ ঘটনায় তিনি দুলারহাট থানায় ওই কৃষকদল নেতাসহ দুইজনকে আসামি করে বিপাকে পরেছেন তিনি। কৃষকদল নেতার অব্যাহত হুমকি-ধামকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যরা।
অভিযুক্ত কৃষকদল সাধারণ সম্পাদক নরে আলম জানান,পূর্বে আমি তার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা ঘর ভিটে বিক্রি বাবদ দেওয়ার কথা থাকলেও ওই টাকা আমি সঠিকভাবে পাইনি। আমি পাওনা টাকা দাবি করছি। চাঁদাদাবি ও মারধরের বিষয় সঠিক নয়।
দুলারহাট থানা কৃষক দলের সভাপতি মো. মনির বেপারী জানান, সম্প্রতি একটি দোকান ঘরের নিয়ে বিপত্তি শুরু হলে আমি নুরে আলমকে পক্ষ থেকে ৬০ হাজার টাকা আদায় করে সমোঝতা করে দিয়েছি। আরও জমি আছে ওই জমিগুলো আওয়ামী লীগের সময় নুরে আলমের কাছ থেকে চেয়ারম্যান আলমগীর হওলাদার জোর করে স্টাম্পে লিখে নিয়েছেন। সেই দোকান ভিটের টাকাই নুরে আলম দাবি করছেন।
দুলারহাট থানার ওসি আরিফ ইফতেখার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এবং ভুক্তভোগী পরিবারের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি খতিয়ে দেখে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :