বগুড়ায় ফেসবুক লাইভে কষ্টের কথা জানিয়ে অ্যালোমিনিয়াম ফসফাইট নামক দুটি বিষাক্ত ট্যাবলেট সেবন করে ‘আত্মহত্যা’ করেন এক যুবক। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে করা মামলায় মিন্টু (৩০) নামে এক পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (২২ জুন) ভোরে জেলার ধুনট পৌর শহরের পশ্চিম ভরণশাহী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মিন্টু পৌর শহরের পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ধুনট পৌর শহরের পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ধুনট ডটকমের স্বত্বাধিকারী রাসেল আহমেদ দেড় বছর আগে কাজিপুর উপজেলার হরিনাথপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ে নাদিরা খান প্রেমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেন।
বিয়ের কিছুদিন পর শাশুড়ির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এক প্রকার বাধ্য হয়েই রাসেল স্ত্রীকে নিয়ে ওই এলাকাতেই তার শাশুড়ির ধুনটের বাসার পাশে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। এমতাবস্থায় তার শাশুড়ি বিভিন্ন অজুহাতে রাসেলের কাছ থেকে স্ত্রী প্রেমার মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা ধার নেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, রাসেল ব্যবসায়িক কাজে ব্যস্ত থাকার সুবাদে স্ত্রী প্রেমা প্রতিবেশী যুবক মিন্টুর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিষয়টি টের পেয়ে রাসেল তার স্ত্রীকে মিন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেমা তাকে ডিভোর্স দিতে রাসেলকে চাপ সৃষ্টি করেন।
এ কারণে গত ২৬ মে রাসেল তার শশুর বাড়িতে গিয়ে পাওনা টাকা ফেরত চাইলে তার শাশুড়ি ও তার লোকজন রাসেলকে মারধর করেন। এ সময় স্ত্রী প্রেমা রাসেলকে বলেন, ‘হয় ডিভোর্স দে, না হয় আত্মহত্যা করে আমাকে চিরতরে মুক্তি দে’। তার এই প্ররোচণায় ও ব্যবসার পুঁজি হারিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন রাসেল।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, একপর্যায়ে গত ২৭ মে সকালে রাসেল তার ফেসবুক লাইভে এসে নিজের কষ্টের কথা জানিয়ে অ্যালোমিনিয়াম ফসফাইট নামক দুটি বিষাক্ত ট্যাবলেট খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন।
পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন দুপুর ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় রাসেলের বাবা সোনা মিয়া বাদী হয়ে ছেলের স্ত্রী নাদিরা খান প্রেমা (২৫), শাশুড়ি বিউটি খাতুন (৫০), পরকীয়া প্রেমিক মিন্টু (৩০), শশুর লুৎফর রহমান খান (৫৮)-সহ ৬ জনকে আসামি করে ধুনট থানায় মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় নিহত রাসেলের স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক হিসেবে মিন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই অমিত হাসান মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আত্মহত্যার প্ররোচণার মামলায় পরকীয়া প্রেমিক মিন্টুকে গ্রেপ্তার করে সোমবার সকালে থানা হাজত থেকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে আদালতে তার ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত ১ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।’
এ মামলার অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান এসআই অমিত হাসান।
আপনার মতামত লিখুন :