চীন ইতোমধ্যেই হিমালয়ের পাদদেশে ব্রহ্মপুত্র নদে বিশ্বের সর্ববৃহৎ জলবিদ্যুৎ বাঁধ তৈরির কাজ শুরু করেছে। তিব্বতের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ইয়ারলুং জাংবো নদীতে ৬০ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে।
বাঁধটি চালু হলে ভারতের ভাটি অঞ্চলের প্রবাহে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে বলছেন বিশ্লেষকরা। এ নিয়ে বেশ চিন্তায় ভারত। দেশটির মতে, এটি তাদের জন্য জলফাঁদ। এমন পরিস্থিতিতেই তিস্তা নদী শাসন ও উন্নয়ন সংক্রান্ত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে তিস্তা পরিদর্শন করেছে চীনের একটি প্রতিনিধিদল।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল থেকে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা পাড়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন তারা। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের রাজনৈতিক বিভাগের পরিচালক জং জিং।
পরিদর্শনকালে প্রতিনিধি দল নদীভাঙন কবলিত এলাকা ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘরবাড়ি ঘুরে দেখে এবং স্থানীয়দের মুখে তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনে। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে উপহারসামগ্রী বিতরণ করেন বেইজিংয়ের প্রতিনিধিরা। চীনা সরকারের এই উদ্যোগে স্থানীয় মানুষের মাঝে আশার আলো জেগেছে।
এর আগে, রংপুর জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তারা বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নই এই অঞ্চলের দুই কোটি মানুষের জীবনমান উন্নয়নের একমাত্র টেকসই সমাধান। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নদীভাঙন রোধ, কৃষি উন্নয়ন, পানি সংরক্ষণ, পরিবেশ সুরক্ষা এবং জীবিকাভিত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
‘তিস্তা বাঁচাও আন্দোলন’র প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘চলতি বছরই যেন তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু হয়, এটাই আমাদের দাবি।’
চীনা প্রতিনিধি দলের প্রধান জং জিং বলেন, ‘আমরা এর আগেও এসেছি, এবারও এসে তিস্তাপাড়ের মানুষের বাস্তব চিত্র দেখলাম। চীন সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে আন্তরিক এবং আমরা আশাবাদী, খুব শিগগিরই এর কাজ শুরু হবে।’
স্থানীয়রাও প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যাপারে গভীর আশাবাদ ব্যক্ত করে চীন সরকারের এই সরাসরি সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ-উন নবী ডন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, কাউনিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক ভরসাসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
আপনার মতামত লিখুন :