মাদারীপুরে কোমরে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন এক প্রবাসীর স্ত্রী। চিকিৎসকের পরামর্শে এক্স-রে করতে গেলে তার ওপর হঠাৎ করে ভেঙে পড়ে এক্স-রে মেশিনের স্ট্যান্ডসহ টিউব। এতে তিনি এবং তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসা ল্যাবের দুইজন স্টাফ আহত হন।
ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের কেসি গোল্ড টাওয়ারে অবস্থিত ‘আরামবাগ ডি-ল্যাব’ নামের একটি প্রাইভেট ল্যাবরেটরিতে। ঘটনার পর আহতদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।
আহত রোগী অন্তরা আক্তার (২৮) রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর গ্রামের ইতালি প্রবাসী আনোয়ার মোল্লার স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানসহ দুই মাস আগে দেশে ফিরেছেন।
ভুক্তভোগী ও ক্লিনিক সূত্রে জানা যায়, কোমরের ব্যথা নিয়ে অন্তরা আক্তার ওই ল্যাবে চিকিৎসা নিতে যান। তিনি চিকিৎসক ডা. গোলাম সরোয়ারের শরণাপন্ন হলে এক্স-রে করার পরামর্শ দেন। পরে এক্স-রে রুমে গিয়ে টেবিলে শুয়ে পড়েন তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ওপর খুলে পড়ে এক্স-রে মেশিনের স্ট্যান্ডসহ ভারী টিউব।
এ সময় ল্যাবের দুইজন স্টাফ তাকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হন। তাদের মধ্যে একজনের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। তবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোগী অন্তরার ঘাড়েও আঘাত লেগেছে। ঘটনার সময় রুমের ভেতরে থাকা তার খালাতো বোন তানিয়া বেগম সামান্য আহত হন।
 
তানিয়া বেগম বলেন, ‘ইতালি প্রবাসী খালাতো বোনকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ডি-ল্যাবে গিয়েছিলাম। এক্স-রে করতে গিয়ে হঠাৎ মেশিন তার ওপর পড়ে যায়। ওই সময় দুইজন স্টাফ তাকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন। তারা না থাকলে হয়তো সে আর বেঁচে থাকত না। আমরা ঘটনাটি আমাদের পরিবারের লোকজনকে জানালে হাসপাতালের লোকজন উল্টো আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। আমরা এই ঘটনার সঠিক বিচার চাই।’
আরামবাগ ডি-ল্যাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদ ফরাজী অকপটে দায় স্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের ভুল আছে বলেই আমরা সবার কথা শুনছি। টেকনিশিয়ানরা মেশিনটি ঠিকমতো ফিটিং করতে পারেনি, এজন্যই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে ওই মহিলার (অন্তরা) তেমন কিছু হয়নি। বরং আমাদের স্টাফরাই বেশি আহত হয়েছে। যেহেতু মহিলা, ব্যথা সহ্য করতে পারেনি। চিকিৎসা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
 
এদিকে দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষজনের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়। প্রশ্ন ওঠে, হাসপাতালে গিয়ে রোগীরা যদি জীবন ঝুঁকিতে পড়েন, তবে নিরাপদ আশ্রয় কোথায়?
রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শামীম আক্তার বলেন, ‘একটা এক্স-রে মেশিন খুলে পড়া খুবই অস্বাভাবিক বিষয়। আমরা এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে রিপোর্ট করব। এ ছাড়াও অবৈধ ও অনিবন্ধিত হাসপাতাল এবং ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহফুজুল হক বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 
                             
                                    


 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                    -20251031233315.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031164732.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন