শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌর শহরে প্রবেশমুখেই মহাসড়কের দুপাশজুড়ে গড়ে উঠেছে বিশাল এক উন্মুক্ত ময়লার ভাগাড়। পৌরসভার গৃহস্থালি বর্জ্য থেকে শুরু করে হাসপাতালের মেডিকেল বর্জ্য, কসাইখানার উচ্ছিষ্ট, এমনকি মৃত পশু-পাখিও দীর্ঘদিন ধরে ফেলা হচ্ছে খোলা জায়গায়। এতে একদিকে যেমন মারাত্মক পরিবেশদূষণ হচ্ছে, অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা পড়েছেন চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।
পৌরসভার সূত্র মতে, ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ পৌরসভার আয়তন প্রায় ৯.২৯ বর্গকিলোমিটার। এখানকার জনসংখ্যা ৩৫–৪০ হাজার। প্রতিদিন প্রায় সাত টন বর্জ্য উৎপন্ন হলেও নেই কোনো নির্ধারিত ডাম্পিং ইয়ার্ড। ফলে শহরের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই গড়ে উঠেছে খোলা বর্জ্যভাগাড়। বাজার ও হাসপাতালসংলগ্ন এলাকাও এর বাইরে নয়।
বিশেষ করে হাজী সাইজ উদ্দিন ফুয়েল পাম্প পার হলেই নালিতাবাড়ী-নকলা মহাসড়কের দুপাশে দীর্ঘদিন ধরে শহরের যাবতীয় বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ, উড়ছে ধোঁয়া, জন্ম নিচ্ছে মাছি, কীটপতঙ্গ ও জীবাণুবাহী পোকার ঝাঁক। অনেক ক্ষেত্রে সেখানে পচে যাওয়া মৃত প্রাণীর দেহও পড়ে থাকতে দেখা যায়।
সাহাপাড়া ফরহাদ ক্যাডেট একাডেমির সামনে ও আমবাগান এলাকাতেও রয়েছে এমন উন্মুক্ত ভাগাড়। এইসব সড়ক দিয়েই প্রতিদিন শত শত মানুষ ও শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ার কারণে এলাকাবাসী প্রায়ই অসুস্থ হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মশিউর রহমান বলেন, ‘স্কুলগামী ছোট বাচ্চাদের প্রতিদিন এই ভাগাড়ের পাশ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। দুর্গন্ধ, ধোঁয়া আর মাছির উপদ্রব দিনে দিনে অসহনীয় হয়ে উঠেছে।’
নালিতাবাড়ী পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুপারভাইজার মনির হোসাইন জানান, আমাদের নিজস্ব কোনো জমি নেই। এজন্য বাধ্য হয়ে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য ফেলতে হচ্ছে। জমি খোঁজা হচ্ছে, পেলেই ডাম্পিং ইয়ার্ড তৈরি করা হবে।’
পৌর প্রশাসক ও ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি বলেন, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। জমি খুঁজে পরিকল্পিত ডাম্পিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’
আপনার মতামত লিখুন :