সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় পথসভার মধ্য দিয়ে শেষ হলো জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দেশব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচি। বুধবার (৩০ জুলাই) রাত ৯টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইলে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দলটির নতুন কর্মসূচির ব্যাপারেও জানানো হয়। এনসিপির নেতারা এদিন আগামী ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সমাবেশে সবাইকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। সেদিন নতুন বাংলাদেশ গঠনের কর্মসূচি ঘোষণা হবে বলে জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এই সাভার, এই আশুলিয়া, এই বাইপাইলের পয়েন্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় আমাদের ছাত্র-জনতা বুক চিতিয়ে লড়াই করেছিল ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে। সাভার, আশুলিয়া গণঅভ্যুত্থানের সময় হটস্পট ছিল আন্দোলনে। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, এদিকে সাভার, আশুলিয়া, ওদিকে গাজীপুর, টঙ্গী- আপনারা প্রতিরোধ তৈরি করেছিলেন বলেই ঢাকা সুরক্ষিত ছিল। ঢাকার মানুষ রাজপথে নামতে সাহস করেছিল।’
নাহিদ বলেন, ‘এই সাভার-আশুলিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা জানি কী নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছিল, গুলি চালানো হয়েছিল, আমার ভাইয়েরা শহীদ হয়েছিল। এখানে বক্তব্য রেখেছেন শহীদ সজলের মা, যাঁকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল নির্মমভাবে।’
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকারের দোসরেরা সারা বাংলাদেশে আমাদের ভাইদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছিল, সেই শেখ হাসিনাকে দশবার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ আসলে কমবে না। বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিন ক্ষমা করবে না শেখ হাসিনাকে। কোনো দিন ক্ষমা করবে না আওয়ামী লীগকে। কোনো দিন ক্ষমা করবে না কোনো ধরনের রিফাইন আওয়ামী লীগকে।’
নাহিদ বলেন, ‘ঢাকা জেলার পাঁচটি উপজেলা থেকে আগামীতে নেতৃত্ব তৈরি হবে। দীর্ঘদিন ধরে এসব উপজেলা বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার। আমরা মনে করি, এই পাঁচ উপজেলায় অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা সম্ভব। শ্রমিক অঞ্চল রয়েছে এই সাভারেও। কিন্তু নানা কারণে শ্রমিকেরা আন্দোলন গড়ে তোলে। কারণ শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দেওয়া হয় না। এই শ্রমিকেরাই আমাদের গণঅভ্যুত্থানে শক্তি জুগিয়েছিল। রাজপথে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েছিল।
আমরা সেই শ্রমিকের ন্যায্য মজুরির জন্য লড়াই করতে চাই। আমরা সাভার-আশুলিয়াসহ পুরো ঢাকা জেলাকে চাঁদামুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সন্ত্রাসমুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। দুর্নীতিমুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের পথে-প্রান্তরে ৩০ দিন জুলাই পদযাত্রা করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে, আমাদের বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাদের পদযাত্রায় যে জনস্রোত নেমে এসেছে, সেই জনস্রোতে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আমাদের বিভিন্ন জায়গায় বাধা দেওয়া হয়েছে, হামলা করা হয়েছে।
কিন্তু আমরা থেমে যাইনি, এই জনস্রোত থামানো যায়নি, পদযাত্রা থামানো যায়নি। ইনশাআল্লাহ আগামীর বাংলাদেশে, আগামীর ঢাকায় এনসিপির দিকে এই জনস্রোত থামানো যাবে না।’
এর আগে ১ জুলাই রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী পদযাত্রা শুরু করেছিল এনসিপি।
আপনার মতামত লিখুন :