লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়েছে। এ সময় চিকিৎসা বিভাগ, খাদ্য সরবরাহ ও চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিসহ নানা অনিয়মের সত্যতা পায় দুদক টিম।
এসব অনিয়মের অভিযোগে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং খাদ্য সরবরাহকারীর বিরুদ্ধে শোকজের সুপারিশ করা হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সঞ্জয় ঘোষালের নেতৃত্বে দুদকের একটি এনফোর্সমেন্ট দল এ অভিযান পরিচালনা করে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, অভিযানের আগে এনফোর্সমেন্ট দলের সদস্যরা ছদ্মবেশে হাসপাতালের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন এবং সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে পরিচয় প্রকাশ করে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ, রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রপাতি, ওষুধ বিতরণ ও খাবার সরবরাহ কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হয়।
অভিযানের সময় দেখা যায়, পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ দেয়া হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে রোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সরকারি ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে রোগী ভর্তি করানো এবং ওয়ার্ড বয় দিয়ে চিকিৎসাসেবা প্রদানের অভিযোগও উঠে আসে।
এ ছাড়া দেখা যায়, হাসপাতালের জন্য নির্ধারিত খাবার নিম্নমানের এবং ডায়েট চার্ট অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়নি। রোগ নির্ণয়ের জন্য সংরক্ষিত বেশ কয়েকটি যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট অবস্থায় রয়েছে।
আবার কিছু যন্ত্র সচল থাকলেও রোগীরা বহিরাগত মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এমনকি হাসপাতালের নিজস্ব পরীক্ষার সরঞ্জাম থাকলেও বাহিরে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে।
ওষুধের স্টক রেজিস্টার যাচাইয়ের সময় নার্স ও স্টক ইনচার্জ সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পাশাপাশি ছুটিতে থাকা ডাক্তারদের ছুটির আবেদন সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
দুদকের উপসহকারী পরিচালক সঞ্জয় ঘোষাল বলেন, `অভিযানে হাসপাতালের নানা অনিয়ম ধরা পড়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের শোকজ করার সুপারিশসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে পাঠানো হবে।'
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সব্যসাচী নাথ বলেন, `অভিযানে যেসব বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলোর লিখিত জবাব দুদক টিমকে প্রদান করা হয়েছে।'
আপনার মতামত লিখুন :