জয়পুরহাটের কালাইয়ে পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় অসহায় এক ছাত্রীকে মূল্যায়ন পরীক্ষার রুম থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মঞ্জুর আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা এমিলি ইয়াসমিন রিনার বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) উপজেলার পুনট ইউনিয়নের মঞ্জুর আইডিয়াল স্কুলে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সুরাইয়া আক্তার মেঘলা (৮) উপজেলার জালাইগাড়ী গ্রামের সাইফুল ইসলামের মেয়ে।
সুরাইয়া আক্তার মেঘলা ইউএনও অফিসারের সামনে বলেন, ‘আমাকে প্রধান শিক্ষক টাকা না দেওয়ার কারণে পরীক্ষা দিতে দেননি। তিনি আমাকে বলেন, ‘তোর বাবা টাকা দিতে পারে না, তাই তোর পরীক্ষা দিতে হবে না, বাড়ি যা এবং রুম থেকে বের করে দেন।’
এ বিষয়ে সুরাইয়ার বাবা সাইফুল ইসলাম জানান, ‘আমরা গরিব পরিবার। অনেক কষ্টে চলি। প্রতি মাসেই স্কুলের বেতন পরিশোধ করি, বকেয়া নেই। পরীক্ষার ফি বাকি ছিল, যেটা আমি দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে আমার মেয়েকে পরীক্ষার রুম থেকে বের করে দেয়। মেয়েটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। পরে মেয়েকে নিয়ে ইউএনও স্যারের কাছে গিয়ে লিখিত অভিযোগ করি।’
সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি এবং শিক্ষার্থীদের গাছের নিচে ক্লাস করানো হচ্ছে।
স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার সুমা, রাকিবসহ অনেকে বলেন, ‘দ্বিতীয় শ্রেণির সুরাইয়া আক্তার মেঘলা ক্লাস মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে গেলে প্রধান শিক্ষক তাকে বেতন ও পরীক্ষার ফি পরিশোধ করতে বলেন। টাকা না দিতে পারায় তাকে রুম থেকে বের করে দেওয়া হয়। তখন সে মাঠে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল।’
এ বিষয়ে মঞ্জুর আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা এমিলি ইয়াসমিন রিনা বলেন, ‘আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না। যেভাবে চান, সেভাবে করুন।’
কালাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। আমরা এসব নিয়ে সরাসরি কিছু করতে পারি না। সরকারি বই বিতরণ করার দায়িত্ব আমাদের।’
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান বলেন, ‘এ ঘটনায় স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর বাবা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন