চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী হাসপাতালে এক প্রসূতির ডেলিভারি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকার মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতালের একটি ফটকে তালা লাগিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা প্রসূতি রোগী ও তার স্বজনদের অবরুদ্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা যায়, দোহাজারী পৌরসভার ঈদ পুকুরিয়া এলাকার ইসমাইলের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার (২৮) প্রসব বেদনা নিয়ে দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে দোহাজারী পরিবার কল্যাণ মা ও শিশু স্বাস্থ্য ইউনিটে আসেন। সঙ্গে ছিলেন তার স্বামীসহ পরিবারের আরও পাঁচ সদস্য।
প্রসূতি রোগীকে দেখতে গিয়ে হাসপাতালের এক আয়া গেট বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ। এ সময় ওষুধ কিনে ফিরেও স্বামী ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। পরে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবদুল্লাহ শাহরিয়ার মিশু রোগীকে হাসপাতালের ২য় তলায় ডেলিভারি রুমে নেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে রোগীর স্বজনরা তাতে রাজি না হয়ে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শাহানাজ আক্তারের তত্ত্বাবধানেই ডেলিভারির দাবি জানিয়ে অবস্থান নেন।
অভিযোগ রয়েছে, এ বিরোধের জেরে একপর্যায়ে গেট তালাবদ্ধ করে রাখা হয়, ফলে রোগী ও স্বজনরা প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকেন।
পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শাহানাজ আক্তার চৌধুরী বলেন, ‘আমি নিয়মিত মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকি। সোমবার এক প্রসূতি রোগী আমার কাছে এলে হঠাৎ হাসপাতালের আরএমও গেট বন্ধ করে দেন। এমনকি স্বজনদের মতের বিরুদ্ধে রোগীকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে নিতে চেয়েছিলেন।’
এ বিষয়ে হাসপাতালের আরএমও ডা. আবদুল্লাহ শাহরিয়ার মিশু বলেন, ‘শাহানাজ আক্তার সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে ডিএমসি ও এমআর কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। কোনো জটিলতা হলে দায় হাসপাতালের ওপরই পড়বে। তাই সরকারি তত্ত্বাবধানে ডেলিভারির পরামর্শ দিয়েছিলাম।’
গেট বন্ধের প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে নিরাপত্তার কারণে বিকেল আড়াইটার দিকে গেট বন্ধ রাখা হয়, কাউকে অবরুদ্ধ করা হয়নি।’
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রশ্মি চাকমা বলেন, ‘পরিদর্শনে গিয়ে জানতে পারি, শাহানাজ আক্তার নিজে ডিএমসি ও এমআর করেন বলে দাবি করেন, যা ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ। মৌখিকভাবে তাকে সতর্ক করেছি। অবরুদ্ধের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো প্রমাণ মেলেনি।’
চন্দনাইশ উপজেলার এমওএমসিএইচ-এফপি ডা. আবু শাহদাত শাকি বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দুটি পৃথক শাখা থাকলেও আমরা সবাই সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। শাহানাজ আক্তার প্রসূতি রোগীদের নিয়মিত সেবা দিয়ে থাকেন। তাকে তালা মেরে অবরুদ্ধ রাখার ঘটনা দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য। ডিএমসি বা এমআর নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন